Friday, March 21, 2025

Fact Check

সৌর-সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৃথিবীর বিপর্যয় আসতে চলেছে- সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল এই দাবির সত্যতা জানুন এই প্রতিবেদনে

banner_image

দাবি:করোনা ও দেশব্যাপী লকডাউন চলার মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে সম্প্রতি একটি খবর ভাইরাল হয়েছে। যা পৃথিবীবাসীকে বেশ দুশ্চিন্তায় ফেলেছে।  বেশ কিছু দিন ধরে বা বলা যেতে পারে এই লকডাউন শুরু হওয়ার সময় থেকেই সূর্যকে নিয়ে একটি খবর ভাইরাল হয়েছে যে- সূর্যও নাকি লকডাউনে যাচ্ছে।  ফলে পৃথিবীর উপর ঘন বিপদের মেঘ জমতে শুরু করেছে। বলা হচ্ছে যে পৃথিবীতে নাকি শুরু হতে পারে ভয়াল ভূমিকম্প, খরা, শীতকালের দীর্ঘতা বাড়তে পারে।  

https://www.facebook.com/titusemotionofficial/photos/a.331678344289351/683509165772932/?type=3&theater
https://www.janadarpan.in/2020/05/solar-minimum.html?fbclid=IwAR2uikfyXvPJ_nF-eouWaSQ3aTa42DnDgtv4TuBkWV0qGWM1LH4kH8pqA1M
https://banglanewsbd24.com/3393/?fbclid=IwAR2SPd2bqPQmMBuNOmsxiJjt0RWTzAcdAT9jumEu2_qFFmwau3Eda1JCyeg
https://www.facebook.com/BanglaChannelNY/videos/2578446568923144/?v=2578446568923144&external_log_id=bfe1422e311c4717f8e6db886cf47988&q=%E0%A6%B6%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%B2%20%E0%A6%B9%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%20%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A6%9B%E0%A7%87%20%E0%A6%B8%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF

বিশ্লেষণ: করোনার ভয়াবহতার কারণে বিষয়ব্যাপী লকডাউন চলছে।  এই লকডাউনের ফলে মানুষ সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে।  অনেকের  অর্থ উপার্জনের রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, অর্থের অভাবে খাওয়ার কিনতে না পারার জন্য কেউ কেউ মৃত্যুর মুখে ঢোলে পড়েছে।  যদিও প্রকৃতির সব থেকে সুন্দর রূপটি আমরা উপলব্ধি করতে পারছি এই লকডাউনে। 

 সূর্যের তাপমাত্রা নিয়ে যে  খবরটি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে সেখানে দাবি করা হয়েছে, যে ক্রমশ নাকি সূর্যের তাপমাত্রা কমে আসছে। ফলস্বরূপ পৃথিবীতে সূর্যের পর্যাপ্ত তাপমাত্রা, সূর্য রশ্মি কম পৌঁছাবে।  ধীরে ধীরে পৃথিবীর তাপমাত্রাও কমে যাবে, যা প্রভাব ফেলবে ঋতুচক্রের উপরও।  গ্রীষ্ম কালের পরিমান কমে শীতকালের পরিমান বেড়ে যাবে।  বাড়বে ভূমিকম্পের সংখ্যা, খরার মতো পরিস্থিতির মুখে পড়বে বিশ্ব।  আগ্নেয়গিরি গুলো পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠবে ও অগ্নুৎপাত ঘটাবে।  ফলে বাড়বে মৃত মানুষের সংখ্যা। 

বাংলা ভাষায় ভাইরাল হওয়া সূর্যকে নিয়ে এই খবরগুলিতে আমরা জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নাম পাই- টনি ফিলিপিন্স। তার মতানুসারে, সূর্যে ‘sun spots’ এর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।  

এই spot বা দাগ হলো, সূর্যের পৃষ্ঠতলে এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে তাপমাত্রা কিছুটা কম প্রায় ৬৫০০ ডিগ্রী ফারেনহাইট।  এই স্থানগুলি তৈরী হয় সূর্যের অতি আকর্ষণীয় চৌম্বকশক্তির দ্বারা।  এদের শক্তি এতটাই হয় যে পৃষ্ঠতলের তাপমাত্রা থেকেও বেশি তাপ এরা শোষণ করে রাখে।  অন্য একটি বিষয়  হলো সূর্যের চৌম্বকশক্তির ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া। আগেও আমরা বলেছি যে পৃষ্ঠতলে  অতি আকর্ষণীয় চৌম্বকশক্তির কিছু কিছু স্থল আছে।  এই আকর্ষণ শক্তি বৃদ্ধির পেছনে মূল ভূমিকা পালন করে সূর্যের নিজস্ব তড়িৎ ক্ষমতা সম্পন্ন কিছু গ্যাস। এরা কখনো খুব সক্রিয় হয়ে ওঠে আবার কখনো এদের কর্মকাণ্ডের কোনো রূপ আভাসই পাওয়া যায়না।  যখন সক্রিয় থাকে তখন চৌম্বক স্থলগুলিকে কখনো এরা প্রসারণ করে, কখনো আবার সংকুচিত করে জট পাকানোর মতো অবস্থায় নিয়ে যায়। সৌরজগতের এই কর্ম কান্ড অনেক ক্ষেত্রে পৃথিবীর উপর প্রভাব ফেলতে পারে।  তাই বিজ্ঞানীরা সর্বদা সূর্যের এই কর্মকান্ডের উপর নজর রেখে চলছে।

মহাজাগতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে জানার সব থেকে বিশ্বস্ত মাধ্যম হলো নাসা।  আমাদের সার্চের দ্বারা আমরা নাসার কিছু ব্লগ পাই যেখানে আলোচনা করা হয়েছে সূর্যের আসন্ন শীতলতা নিয়ে।  জানা যায় যে ‘সূর্যের তাপমাত্রার সর্বনিম্নতা ‘ এটি একটি সাধারণ ঘটমান বিষয়। বৈজ্ঞানিকদের দ্বারা তৈরী তথ্যকে বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে প্রতি ১১ বছর অন্তর এই সর্বোনিম্নতার ঘটনাটি ঘটে। যদিও বিশ্বের একদল জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, এই ঘটনা কে ‘ Grand Mini iceage ‘ বলা যেতে পারে কারণ, এই সময়ে সূর্যের spot বা স্থান ও তাদের কীর্তিকলাপ কম চোখে পরে।  আবার অন্য বিজ্ঞানীর দল একে তুষার যুগের তকমা দিতে প্রস্তুত নয়।  নাসার ব্লগ থেকে জানতে পারি, এই তুষার যুগ কখনো দশক থেকে শুরু করে কয়েক শতাব্দী পর্যন্ত চলতে পারে।  যেমন এই তুষার যুগ দেখা গিয়েছিলো ত্রয়োদশ – ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত।  অন্য একটি বসি হলো ‘Maunder Sunsopt’ যখন সূর্যের মধ্যে নতুন নতুন দাগ তৈরী হতে দেখা যায় আর যার স্থায়িত্ব কাল ছিল ১৬৪৫-১৭১৫।  সূর্যের অভ্যন্তরীন তাপমাত্রা সর্বনিম্নে পৌঁছনোর ফলে, সূর্যের সক্রিয় চৌম্বকশক্তির ক্ষমতা হ্রাস পাবে, ফলে মহাজাগতিক রশ্মি পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখরে এসে , ও মহাকাশ বিচরণকারীদের কিছুটা হলেও সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

CNN – থেকেও আমরা এই ঘটনাকে রিপোর্ট পাই। 

Science alart.com এর ওয়েব সাইট থেকে আমরা সূর্যের সর্বনিম্ন ঘটনাটিকে নিয়ে একটি রিপোর্ট এই যেখানে বলা হয়েছে ২০১৭সালেই বিজ্ঞানীরা একটি ধারণা পেয়েছিলেন যে ২০১৯-২০২০ সালে সূর্যের তাপমাত্রা কমতে চলেছে। আমরা ২০২০ সালে ২৪ নম্বর সূর্যের-সর্বনিম্ন বিষয়টি উপলব্ধি করতে চলেছি।  যদিও তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, সূর্যের চৌম্বক ক্ষমতা কমে যাওয়ার ফলে যে সূর্য রশ্মি পৃথিবীতে এসে পৌঁছাবে তার ফলে ক্যান্সারের মতো রোগের সংখ্যা বাড়তে পারে। আমরা আমাদের বায়ূ পরিমণ্ডলে সূর্যের আলোরছটা দেখতে পাই তা সূর্যের মধ্যে অবিরত কর্মকান্ডের ফলে তৈরী হয়। হয়ত এই তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ফলে বেতার যোগাযোগ ও স্যাটেলাইটের পথ প্রদর্শন বিঘ্নিত হতে পারে। 

সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ‘ তুষার যুগের’ সূচনা হতে চলেছে, ‘সূর্য লকডাউনে চলেছে’ পৃথিবীর উপর আসতে চলছে ভয়ঙ্কর দুর্যোগ‘ এই দাবি নিয়ে  যে খবর গুলি ঘুরে বেড়াচ্ছে, তা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।

ব্যবহৃত টুলস:

  • Google search
  • Nasa blog

ফলাফল: বিভ্রান্তিকর (misleading)

(সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান checkthis@newschecker.in অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে। ) 

image
সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান অথবা whatsapp করুন- +91-9999499044 অথবা আমাদের ইমেল করুন checkthis@newschecker.in​. এই নম্বরে। এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us -র মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন ও ফর্ম ভরতে পারেন।
No related articles found
Newchecker footer logo
Newchecker footer logo
Newchecker footer logo
Newchecker footer logo
About Us

Newchecker.in is an independent fact-checking initiative of NC Media Networks Pvt. Ltd. We welcome our readers to send us claims to fact check. If you believe a story or statement deserves a fact check, or an error has been made with a published fact check

Contact Us: checkthis@newschecker.in

17,500

Fact checks done

FOLLOW US
imageimageimageimageimageimageimage