Newchecker.in is an independent fact-checking initiative of NC Media Networks Pvt. Ltd. We welcome our readers to send us claims to fact check. If you believe a story or statement deserves a fact check, or an error has been made with a published fact check
Contact Us: checkthis@newschecker.in
Coronavirus
দাবি:
সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রীকে নিয়ে। মাননীয়া যিনি বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রী, করোনার কারণে বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার নাম করে একটি উক্তি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে। দীপু মনির ভাইরাল বিবৃতিটি এখানে দেওয়া হলো – ‘ সন্তান ১ বছর লেখাপড়া না করলে মূর্খ হবে না।কিন্তু করোনা ভাইরাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ ছড়িয়ে গেলে অনেক মায়ের কোল খালি হবে ‘- ডঃ দীপু মনি [ মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ]
কিছু পোস্টের আর্কাইভ ও স্ক্রিন শট দেওয়া হলো।
বিশ্লেষণ: ডঃ দীপু মনি যিনি বাংলাদেশে ২০০৮ সালে আওয়ামিলীগের সংখ্যাগরিষ্টতা পাওয়ার পর থেকে মন্ত্রী পদে আসীন হন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৬ সালে তিনি পুনরায় তার দল থেকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রূপে নির্বাচিত হন এবং ২০১৯ সালে একাদশ জাতীয় জাতীয় সংসদের অধীনে তিনি বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী পদে নিযুক্ত হন।
মূলত ২৬সে মার্চ থেকে ৬৬ দিনের জন্য শেখ হাসিনার সরকার করোনার কারণে বাংলাদেশে লকডাউন ঘোষণা করে। এই সময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া প্রায় সব কিছুই বন্ধ রাখা হয় বাংলাদেশে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৭ই মার্চের থেকে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী জানান।
কিছু কিওয়ার্ড সার্চের দ্বারা আমরা মার্চ মাসের বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত কিছু খবর পাই ।
৯ই মার্চ The Bussiness Standerd Bangla ও ১০ই মার্চের Bangla Tribune – র তরফ থেকে আমরা একটি খবর পাই যেখানে শিক্ষা মন্ত্রী দীপু মনি বলেন যে আইইডিসিআর মতামত অনুসারে বাংলাদেশে এখনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি হয়নি। ঢাকায় জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে (নায়েম) ১৫৮তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন। তিনি আরো বলেন যে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি যে কিছু দিনের মধ্যে শুরু হতে চলা দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা পিছিয়ে যাবে কিনা।
বিবিসি বাংলার ২২শে এপ্রিলের একটি রিপোর্ট আমাদের সামনে আসে যেখানে শিক্ষা প্ৰতিষ্ঠান গুলি খোলার ব্যাপারে সরকারের ভাবনার কথা আমরা জানতে পারি। জানা যায় কিছু কর্মক্ষত্রের প্রতিষ্ঠান ছাড়া কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনই খোলা সম্ভব নয়। গ্রীষ্মকালীন ও রমজানের ছুটি থাকার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আপাতত বন্ধই রাখা হবে।
১৫ই মার্চের দৈনিক ইনকিলাব সংবাদ পত্রের দ্বারা জানতে পারি যে স্কুল, কলেজের পড়ুয়াদের অবিভাবকদের ক্রোধের কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের সরকার, কারণ সংক্রমণের খবর পাওয়ার পরেও কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলি খোলা রয়েছে? স্কুল, কলেজে পড়ুয়ারা ও শিক্ষকদের জমায়েত হওয়ার ফলে এখানে কোনো সামাজিক দূরত্ব মানা হবে না, বাচ্চারা একই বেঞ্চে বসবে, বাথরুম ব্যবহার করবে, খেলাধুলা করবে, এতে করে তাদের মধ্যে অতি দ্রুত করোনা সংক্রমণ ছড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন মা-বাবারা।
বিবিসি বাংলার ৩১শে মার্চের ও Bangla Tribune ৩১শে মের এটি রিপোর্ট পাই যেখানে ২৬শে মার্চ থেকে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত প্রথম যে লোকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল তার সময়সীমা বৃদ্ধির কথা বলে হয়েছে আর এর সাথে সাথে অনিশ্চিত হয়ে পরে ১লা এপ্রিল থেকে শুরু হতে চলা দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা। পরিস্থিতি যদি আয়ত্তের মধ্যে আসে তবেই হবে এইচএসসি পরীক্ষা।
TBN24 এর ইউটুবে চ্যানেল থেকে আমরা একটি ভিডিও পাই যেখানে শিক্ষা মন্ত্রী বলেছেন যে বাংলাদেশ সরকার সর্বত ভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে স্কুল বন্ধ থাকা কালীন কি করে ইন্টারনেট ও টেলিভিশনের দ্বারা ছাত্র ছাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় শিক্ষক শিক্ষিকাদের রেকর্ড করা পাঠ্যসূচি।
Daffodil International University তরফ থেকে ৩ দিনের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল অনলাইন ক্লাস শিক্ষার্থীদের জন্য। এখানে মাননীয়াকে বলতে শোনা গেছে যে তিনি ও বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টা শুধু মাত্র এর পরিস্থিতির জন্য নয়, বরং সারা বছর জুড়ে যেন শিক্ষার্থীরা এই অনলাইন ক্লাসের সুবিধা নিতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।
৮ই জুনের দৈনিক অধিকার সংবাদ পত্রের দ্বারা আমরা জানতে পারি বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রী দীপু মনির নাম করে সোশ্যাল মিডিয়াতে যে উক্তিটি ভাইরাল হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে – সন্তান এক বছর না পড়লে মূর্খ হবে না, তবে করোনা হলে অনেক মায়ের কোল খালি হবে ! এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তিনি এই ধরণের কোনো মন্তব্যই করেননি জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের।
বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতির জন্য সরকার পক্ষ থেকে যে লোকডাউনের আদেশ জারি করা হয়েছিল, তাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে সরকার ৩০শে মে পর্যন্ত লোকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এর ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠ্য গ্রহণে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেই কথা মাথায় রেখে ভার্চুয়াল ক্লাসের সূচনা হয়। যেখানে তিনি এতটা ইতিবাচক শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নিয়ে, এই ধরণের মন্তব্য তিনি কখনোই করতে পারেন না।
দীপু মনির নাম সোশ্যাল মিডিয়াতে যে পোস্টটি ভাইরাল হয়েছে তা ফেক। আমাদের গবেষণার দ্বারা আমরা যে তথ্য পাই সেখানে এমন কোনো মন্তব্যের উপস্থিতি আমরা পাইনি।
ব্যবহৃত টুলস:
ফলাফল: মিথ্যা fake claim
(সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান checkthis@newschecker.in অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে। )