শুক্রবার, ডিসেম্বর 20, 2024
শুক্রবার, ডিসেম্বর 20, 2024

HomeFact Checkনেতাজির টুপি খোয়া গেছে? সোশ্যাল মিডিয়াতে নেতাজির ব্যবহৃত জিনিস হারিয়ে যাওয়া নিয়ে...

নেতাজির টুপি খোয়া গেছে? সোশ্যাল মিডিয়াতে নেতাজির ব্যবহৃত জিনিস হারিয়ে যাওয়া নিয়ে ছড়ালো বিভ্রান্তিকর দাবি

Authors

With a penchant for reading, writing and asking questions, Paromita joined the fight to combat and spread awareness about fake news. Fact-checking is about research and asking questions, and that is what she loves to do.

ফেসবুকে ও টুইটারে কিছু পোস্ট আমাদের সামনে আসে যেখানে বলা হয়েছে নেতাজির টুপি খোয়া গেছে। শুধু টুপি নয়, ওনার পোশাক, তরবারি খোয়া গেছে রাজধানীর লালকেল্লার সংগ্রহশালা থেকে।

https://www.facebook.com/satyaki.kanjilal.14/posts/1005504940201593

সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করে সাত্যকি কাঞ্জিলাল নামের ব্যক্তি বিজেপি সরকারের দিকে তীর ছুড়ে তাদের ব্যর্থতার কথা বলেছে। ওনার মতে মোদী সরকার দেশের ঐতিহ্যকে রাখা করতে পারছে না এবং তা ধীরে ধীরে রসাতলে যাচ্ছে।

জল্পনার সূত্রপাত হয়েছে নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্র কুমার বসুর টুইটের পর থেকে। ২৭শে জুন তিনি টুইট করেন যে – বসু পরিবার অনেক আগেই নেতাজির ব্যবহৃত টুপি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে তুলে দিয়েছিলো এবং সাথে বলা হয়েছিল এই মূল্যবান জিনিস যেন এদিক ওদিক না হয়। চন্দ্র কুমার বসু অনুরোধ করেছেন মোদী সরকারের কাছে যেন যতশীঘ্র সম্ভব নেতাজির জিনিসগুলো তার আসল জায়গা- লালকেল্লায় রাখে।

Fact-check / Verification

বাঙালির গৌরব ও ভারতবর্ষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আজ বাঙালির প্রতিটি রন্ধ্রে বিচরণ করেন। সারাদেশ হয়তো ২৩শে জানুয়ারিতে ওনাকে মনে করে কিন্তু বাংলার মানুষ আজও নেতাজির ক্রিয়াকলাপ, উক্তি, ওনার ধ্যানধারণা এমনকি ওনার ত্যাগের কথা মনে করে। এখনও পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়াতে নেতাজির হাসিমুখের ছবি ভাইরাল হয়, ছড়ায় আজাদ হিন্দ ফৌজের সামনে দেওয়া ওনার বক্তৃতার ভিডিও। আজও বাংলার বিদ্যালয়ে পাঠ্যক্রমে পড়ানোয় হয় কিভাবে সুভাষচন্দ্র সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাস্ করে মোটা মাইনের চাকরি ছেড়ে দেশমাতাকে পরাধীনতার শিকল থেকে মুক্তি দেওয়ার যুদ্ধে নেমে ছিলেন। ইংরেজ সরকারের চোখে ধুলো দিয়ে বেশ পাল্টে কিভাবে পালিয়ে অন্য দেশে চলে গিয়েছিলেন , সেই বর্ণনা আজও রোমাঞ্চর উদ্রেক ঘটে।

নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্র কুমার বসু ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময়, দক্ষিণ কলকাতা থেকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকে বিজেপি থেকে দাবি উঠতে থাকে যে কংগ্রেসের আমলে স্বাধীনতার জন্য নিজের বলিদান দেওয়া নেজাতির প্রতি কোনো শ্রদ্ধাই দেখায়নি। এরপর থেকেই বিজেপির অনেক নেতা, মন্ত্রীদের মুখে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় নেতাজির ত্যাগের কথা শোনা যায়।

নেতাজির টুপি খোয়া গেছে এই দাবি করে টুইট করেন নেতাজির নাতি চন্দ্র কুমার বসু। ওনার এই টুইটের পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়াতে শোরগোল পরে যায়, ২০২০ তে করোনা সংক্রমণের পর যখন লালকেল্লা খুলে যায় সাধারণ মানুষদের জন্য তখন অনেকেরই চোখে পরে নেতাজির ব্যবহৃত জিনিস তাদের স্থানে নেই। এই ঘটনা অনেককে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার চুরি যাওয়ার কোথাও মনে করিয়ে দেয় ।

নেতাজির টুপি খোয়া গেছে এই দাবিটি বিভ্রান্তিকর, কারণ সেটি দিল্লী থেকে কলকাতা নিয়ে আসা হয়েছিল

সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল দাবি নেতাজির টুপি খোয়া গেছে – আসলে বিভ্রান্তিকর। চন্দ্র কুমার বসুর টুইটার থেকেই আমরা আজ দুটি টুইট পাই যেখানে একটি ANI এর সাথে নেতাজির টুপির অন্তর্ধানের বিষয়ে সাক্ষাৎকারের টুইট এবং অন্যটিতে তিনি লিখেছেন এই মহামূল্যবান স্মৃতি কখনই তাদের আসল জায়গা থেকে সরানো উচিত নয়। টুইটে তিনি লিখেছেন ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাতে বসু পরিবার নেতাজির টুপি, টুপিটি মোদী নিজের হাতে লালকেল্লায় রাখেন। যদি সেটি স্থানান্তরিত করা হয়, তাহলে কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত পরিবারকে তা জানানো। বসু পরিবার দিল্লী থেকে নেতাজির জিনিস কলকাতায় আনা হয়েছে এই বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছে।

এরপর কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক মন্ত্রকের প্রধান প্রল্লাদ সিংহ প্যাটেল টুইট করে জানান যে নেতাজির টুপি, ও তলোয়ার সরক্ষিত আছে, তা খোয়া যায়নি। নেজাতির ১২৫তম জন্মতিথিতে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নেতাজির ২৪টি জিনিস ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ধার নিয়েছে, এবং তা খুব শীঘ্রই যথা স্থানে ফিরিয়ে আনা হবে।

নেতাজির টুপি খোয়া গেছে এই বিভ্রান্তিকর দাবিকে নিয়ে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকার একটি খবর আমরা পাই যেখানে বলা হয়েছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের নির্দেশক জয়ন্ত সেনগুপ্ত জানিয়েছেন এই বছর ২৩শে জানুয়ারি নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নেতাজির ব্যবহৃত জিনিসের প্রদর্শনের সূচনা করেন খোদ প্রধানমন্ত্রী এবং এই অনুষ্ঠানের জন্য দিল্লী থেকে ওনার ২৪টি জিনিস নিয়ে আসা হয়েছে MOU তে সাক্ষর করে। এই দিনটিকে প্রধানমন্ত্রী মোদী পরাক্রমী দিবস রূপেও ঘোষণা করেছেন। এই বিষয় নিয়ে Hindustan Times এর প্রকাশিত খবর এখানে দেখতে পারেন।

https://www.anandabazar.com/india/netaji-subhas-chandra-boses-cap-not-stolen-clarifies-centre-after-several-allegations-dgtl/cid/1289630

https://www.hindustantimes.com/india-news/no-netaji-s-cap-is-not-missing-says-govt-as-chandra-kumar-bose-complains-101624804706169.html

অর্থাৎ নেতাজির টুপি খোয়া গেছে এই দাবিটি বিভ্রান্তিকর, কারন ওনার টুপি, তলোয়ার, উর্দি ও আরও কিছু জিনিস কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে রাখা আছে।

Conclusion

সোশ্যাল মিডিয়াতে #NetajisCapMissing র সাথে করা দাবি নেতাজির টুপি খোয়া গেছে আসলে একটি বিভ্রান্তিকর দাবি। ওনার স্মৃতিবিজড়িত ২৪টি জিনিস যার মধ্যে ওনার টুপি, তলোয়ার, পোশাক রয়েছে তা এখন কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে সযত্নে রয়েছ।

Result- Misleading

Our sources

Chandra Kumar Bose tweet-https://twitter.com/Chandrakbose/status/1409422464438857735

ANI-https://twitter.com/ANI/status/1409407132382863360

Anandabazae Patrika- https://www.anandabazar.com/india/netaji-subhas-chandra-boses-cap-not-stolen-clarifies-centre-after-several-allegations-dgtl/cid/1289630

Prahlad Singh Patel tweet-https://twitter.com/prahladspatel/status/1409163360428384259

Hindustan Times- https://www.hindustantimes.com/india-news/no-netaji-s-cap-is-not-missing-says-govt-as-chandra-kumar-bose-complains-101624804706169.html

সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান checkthis@newschecker.in অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে। এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us -র মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন ও ফর্ম ভরতে পারেন।

Authors

With a penchant for reading, writing and asking questions, Paromita joined the fight to combat and spread awareness about fake news. Fact-checking is about research and asking questions, and that is what she loves to do.

Paromita Das
With a penchant for reading, writing and asking questions, Paromita joined the fight to combat and spread awareness about fake news. Fact-checking is about research and asking questions, and that is what she loves to do.

Most Popular