লাভ জিহাদের ভুয়ো দাবিতে ছড়ালো বাংলাদেশি অভিনেত্রীর সিনেমার পোস্টার ও দৃশ্য

সোশ্যাল মিডিয়ায় দুটো ছবির একটি কোলাজ প্রচুর পোস্ট করা হয়। যার একটিতে এক দম্পতিকে দেখা যাচ্ছে এবং অন্যটিতে মুখে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে এক মহিলাকে। একই সঙ্গে দাবি করা হয় যে, ২০২৩ সালে আবদুল আদিল খান নামে এক মুসলিম যুবকে বিয়ে করেন নন্দিনী মণ্ডল নামে এক হিন্দু মহিলা এবং তারপর, ধর্ম পরিবর্তন করে ইসলাম গ্রহণ করেন। কিন্তু বিয়ের দু’বছর পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। অভিযোগ, ওই যুবক মেয়েটির উপর অত্যাচার শুরু করে এবং বাড়ি থেকে বের করে দেয়। লাভ জিহাহ-সহ সাম্প্রদায়ির দাবি-সহ পোস্টটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ছে।

Evidence

ক্ষতচিহ্ন-সহ যে মহিলার ছবিটি ভাইরাল কোলাজে দেখতে পাওয়া যায়, সেটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে দেখা যায় যে, ২১ অক্টোবর, একই ফ্রেম-সহ একটি ভিডিয়ো নিজেপ ফেসবুকে পোস্ট করেন বাংলাদেশি অভিনেত্রী জ্যোতি ইসলাম। ওই পোস্টের ক্যাপশনের হ্যাসট্যাগে ‘#shooting’ কথাটি ব্যবহার করা হয় এবং একটি কমেন্টের রিপ্লাইতে অভিনেত্রী নিজেই জানান যে, ভিডিয়োটি একটি শুটিংয়ের দৃশ্য। সিনেমাটির নাম, ‘আমি নুসরত বলছি’।    

এরপর, দম্পতির ছবিটির রিভার্সইমেজ সার্চ করলে দেখা যায় যে, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখ, একই ছবি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছিলেন, জ্যোতি ইসলাম। সেটি, ‘বিধবা বউ’ নামে তাঁর একটি সিনেমার পোস্টার। 

আরও সার্চ করলে দেখা যায় যে, বাংলাদেশি অভিনেত্রী জ্যোতি ইসলাম নিজেই ভাইরাল কোলাজটিকে ভুয়ো বলে দাবি করেছেন। নিজের ফেসবুকে সেই সংক্রান্ত পোস্টও করেন তিনি। 

Verdict

এখান থেকে স্পষ্ট যে, ভাইরাল দাবিটি ভুয়ো। বাংলাদেশি অভিনেত্রী সিনেমার দৃশ্যকে লাভ জিহাদের-দাবিতে ভুয়ো ব্যাখ্যা-সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে।

FAQ
প্রশ্ন ১: ভাইরাল ছবিগুলো কোথা থেকে এসেছে?
উত্তর: ছবিগুলো বাংলাদেশি অভিনেত্রী জ্যোতি ইসলামের দুটি সিনেমা—‘আমি নুসরত বলছি’ ও ‘বিধবা বউ’-এর দৃশ্য থেকে নেওয়া।
প্রশ্ন ২: ‘লাভ জিহাদ’ সম্পর্কিত ঘটনাটি কি সত্যি?
উত্তর: না, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি। ঘটনাটি কোনও বাস্তব ঘটনা নয়।
প্রশ্ন ৩: জ্যোতি ইসলাম কী বলেছেন?
উত্তর: তিনি নিজেই বলেছেন, ভাইরাল ছবিগুলো তাঁর সিনেমার শুটিং দৃশ্য, বাস্তব নয়।
প্রশ্ন ৪: ছবিগুলো প্রথম কোথায় পোস্ট করা হয়েছিল?
উত্তর: জ্যোতি ইসলাম নিজে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন, শুটিং উল্লেখ করে।
প্রশ্ন ৫: এ ধরনের ভুয়ো পোস্ট ছড়ানো কেন বিপজ্জনক?
উত্তর: এগুলো ধর্মীয় বিভাজন ও সামাজিক উত্তেজনা বাড়ায়, তাই যাচাই না করে শেয়ার করা ঠিক নয়।

Sources
Facebook post by Jouty Islam
Instagram post by Jouty Islam