Newchecker.in is an independent fact-checking initiative of NC Media Networks Pvt. Ltd. We welcome our readers to send us claims to fact check. If you believe a story or statement deserves a fact check, or an error has been made with a published fact check
Contact Us: checkthis@newschecker.in
Fact Check
দাবি: Nayi Dunia – সংবাদপত্রের প্রধান সম্পাদক শাহিদ সিদ্দিকী সম্প্রতি একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন তার টুইটার প্রোফাইল থেকে। ভিডিওটিতে একজন মহিলা কোলে তার দুধের শিশু কে নিয়ে দুটি ট্রেনের সংযোগ স্থলে বসে সফর করতে দেখা যাচ্ছে। তার এই ভিডিটিতে তিনি লিখেছেন যে- দেখুন এই মা কে যে মালবাহী ট্রেন এ বসে তার বাচ্চাকে নিয়ে কি ভাবে যাত্রা করছে। এই প্রাণহীন শহরে খিদের জ্বালায় মৃত্যুর থেকেও ভয়ানক তার এই বিপদজনক যাত্রা।

বিশ্লেষণ:করোনার করাল দংশনের থেকে দেশ ও দেশবাসীকে বাঁচানোর জন্য সরকার পক্ষ থেকে লকডাউনের ঘোষণা করা হয়েছে। ২২শে মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই লকডাউনের এখন চতুর্থ পর্যায় চলছে ভারতে। কোথাও আক্রান্তের সংখ্যা কমার খবর তো কোথাও আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই অবস্থায় সব থেকে বেশি দুর্দশার মুখে পড়েছে পরিযায়ী শ্রমিকরা। তাদের কাছে কাজ ও প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকার কারণে পায়ে হেঁটে তারা তাদের বাড়ির পথ ধরেছেন। অনেকে এই কঠিন সংগ্রামের মুখে পরে প্রাণ ত্যাগ ও করেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে, টিভি চ্যানেল গুলোতে প্রায় প্রতিদিনই এই শ্রমিকদের কষ্ট – দুরাবস্থার ছবি আমরা দেখছি। এই পরিস্থিতে শাহিদ সিদ্দিকীর মতো একজন জন প্রিয় ব্যক্তি যিনি একাধারে পার্লামেন্টের সদস্য ও Nayi Dunia- র মতো জনপ্রিয় হিন্দি সংবাদপত্রের প্রধান সম্পাদক, তিনি একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন তার টুইটার প্রোফাইল থেকে, যেখানে তিনি দাবি করেছে কি ভাবে এক সহায় সম্বলহীন মা তার দুধের শিশুকে নিয়ে টুডি ট্রেনের কোচের সংযোগ স্থলে বসে ট্রেন সফর করছে। ভারতর সরকার যে কতটা নির্মম এই শ্রেণীর মানুষ গুলির দিকে, এই কথাটিই যেন বার বার ফুটে উঠছে তার এই ভিডিও থেকে।
কিন্তু তার এই ভিডিওটি ভারতের নয় না এর সাথে করোনা পরিস্থিতির কোনো সম্পর্ক আছে। ভিডিওটির Invid টুলের দ্বারা কীফ্রেমে ভাগ করে নিয়ে আমরা যখন Yandex টুলের দ্বারা রিভার্স ইমেজ সার্চ করি তখন এই ভিডিওটির কিছু লিংক আমরা পাই।


swns নামের একটি ইউটুব চ্যানেল থেকে আমরা এই ভিডিওটি পাই যা ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে আপলোড করা হয়েছিল। ভিডিটির বিবরণে যা লেখা আছে তা হলো, ভারতের বিহারে একটি দ্রুত গতির ট্রেনের কোচ সংযোগ স্থলে বসে কোলে একরত্তি একটি বাচ্চাকে নিয়ে যাত্রা করছে। ইনি কোনো বসার জায়গা পাননি কারণ যে আগে বসার জায়গা পাবে সেই জায়গাটি দখল করবে।
Daily mail UK-র ইউটুব চ্যানেল ও তাদের একটি আর্টিকেল থেকেও আমরা এই ভিডিওটির পাই যেখানে একে বিহারের ঘটনা বলা হয়েছে ২০১৮ সালে এটি ভিডিওটি তাদের ইউটুব চ্যানেলে আপলোড করা হয়েছিল।
এই একই ভিডিও ২০১৯ সালে উপলোড করা হয় Farzi TV নামের ইউটুব চ্যানেলে। যেখানে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে – আপনি এই পরিস্থিতিতে কি পড়েছেন কখনো।
এই বিষয় গুলি ছাড়াও আর একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য তা হলো যে ধরণের ট্রেন এই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে তা ভারতীয় রেলের মতো দেখতে নয়।
ট্রেনের ছবিটি স্ক্রিন শট নিয়ে আমরা সার্চ করলে বাংলাদেশের ট্রেনের কিছু ছবি আমাদের সামনে আসে। এই সূত্র ধরে আমরা বাংলাদেশের ট্রেনের ধরণ কেমন জানার জন্য গুগল সার্চ করি। আমরা এখানে বাংলাদেশের ও ভারতের ট্রেনের কিছু ছবি দিলাম এই বিষয়টিকে আরো স্পষ্ট করে বোঝার জন্য।


আমরা এই ভিডিওটির কিছু কীওয়ার্ড খুঁজে নিয়ে ফেসবুকে সার্চ করতে শুরু করি। The24HOUR ও Pakinfoweb পেজ থেকে এই ভিডিওটি আমরা পাই যেখানে একটির আপলোড তারিখ হলো ২০১৬ ও অন্যটির ২০১৮। The24HOUR পেজ থেকে এই ভিডিওটিকে ২০১৬ সালে আপলোড করা হয়। ইউটুবে এই ভিডিওটি নিয়ে সার্চ করলে আমরা আসল ভিডিওটি পাই।

The24HOUR চ্যানেলের থেকে ২০১৬ সালের ১অগাস্ট আপলোড করা হয়, যেখানে এই ভিডিওটির বিবরণ স্বরূপ লেখা হয়েছে, ‘ বাংলাদেশের রাজধানীতে একজন মায়ের তার শিশুকে নিয়ে বিপদজনক যাত্রা’ .
বাংলাদেশের প্রথম সারির সংবাদ সংস্থা ‘প্রথম আলো’ ইউটুব চ্যানেল থেকেও আমরা এই ভিডিওটি পাই।
অর্থাৎ এই ভিডিওটি চার বছর পুরানো বাংলাদেশের ঢাকার। এর সাথে ভারতের বর্তমান পরিস্থিতির কোনো সম্পর্কই নেই। ভিডিওটি যে দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেওয়া হয়েছিল তা সম্পূর্ণ ভুল।
Newschecker টিম ২০১৯ সালে প্রথম এই ভিডিওটির দিকে আলোকপাত করে।
ব্যবহৃত টুলস:
ফলাফল:ভুয়ো দাবি
(সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান checkthis@newschecker.in অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে। )