শুক্রবার, নভেম্বর 22, 2024
শুক্রবার, নভেম্বর 22, 2024

HomeCoronavirusহাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রপ্তানি করার জন্য ভারত কোনো শর্ত রাখেনি, ভুল তথ্যের পোস্ট সোশ্যাল...

হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রপ্তানি করার জন্য ভারত কোনো শর্ত রাখেনি, ভুল তথ্যের পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়াচ্ছে

Authors

With a penchant for reading, writing and asking questions, Paromita joined the fight to combat and spread awareness about fake news. Fact-checking is about research and asking questions, and that is what she loves to do.

দাবি

সম্প্রতি whatsapp এর দ্বারা আমাদের কাছে একটি পোস্ট আসে যেখানে ভারতের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রপ্তানি করাকে কিছু দাবি করা আছে। ভাইরাল এই বাংলা পোস্ট অনুযায়ী ভারত আমেরিকাকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রপ্তানি করবে আর এর জন্য ভারতের যে তিনটি শর্ত আমেরিকার সামনে রাখা হয়েছিল, ট্রাম্প তা মেনে নিয়েছে।  শর্ত গুলি হলো 

১. FDA যেন ভারতের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা গুলির উপর যেন বেশি অনুসন্ধান না করে।  

২. ফার্মা কোম্পানিগুলির থেকে FDA যেন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।  

 ৩. ভারতের ফার্মা কোম্পানি গুলি যেন আমেরিকার বাজারে ব্যবসা করার ছাড়পত্র পায়।  

বিশ্লেষণ

সম্প্রতি আমাদের Newschecker- এর whatsapp এই মেসেজ  এসেছে যেখানে লেখা রয়েছে যে ‘ ভারত আমেরিকাকে hydroxychloroquine দিতে রাজি হয়েছে তবে তার জন্য তিনটি  শর্ত ভারত রেখেছে আমেরিকার সামনে, আর সেই শর্তগুলি আমেরিকাও মেনে নিয়েছে। কিন্তু এই দাবিগুলির কি আদৌ কোনো বাস্তবতা আছে? 

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী আমেরিকাতে এই পর্যন্ত  করোনায় বলি হয়েছে ১২৭৪০৩৯৫০৩০ জনের  করোনা পসিটিভ রিপোর্ট সামনে এসেছে। গত শনিবার প্রথম খবরে আসে যে বিশ্বের সর্বশক্তিশালী দেশ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র Covid-19 corona-তে আক্রান্তদের জলদি সুস্থ করে তোলার জন্য ভারতের থেকে ম্যালেরিয়া রোগের ওষুধ hydroxychloroquine পাঠানোর জন্য আবেদন করেছে। যদিও আবেদন কথাটি ভুল বরং বলা যেতে পারে, ভারত যদি এই ওষুধ পাঠাতে অসমর্থ হয় তবে তার ফল হয়তো ভারতের জন্য ভালো হবে না।  আমেরিকা এর প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিতে কিন্তু পিছপা হবে না।

এই ক্ষেত্রে বলে রাখি hydroxychloroquine কি?  করোনা যে ভয়ঙ্কর অতিমারীর রূপ ধারণ করেছে তাকে প্রতিরোধ করতে এখনো কোনো দেশেই সমর্থ হয়নি। বরং এর প্রতিষেধক বাজারে আসতে  এখনো বছর দেড়েক সময় লাগবে বলে জানা গেছে। এই পরিস্থিতিতে hydroxychloroquine যা কিনা মূলত ম্যালেরিয়ার প্রধান ওষুধ তার হটাৎ দরকার কেন পড়লো আমেরিকার?  আসলে করোনা আক্রান্ত রোগীর উপর এই ওষুধ প্রয়োগ করার পর তাতে কাজ হয়েছে। আর ভারতের কাছে এই ওষুধের স্টকের পরিমান সব থেকে বেশি তাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের থেকে  hydroxychloroquine রপ্তানির প্রস্তাব দিয়েছেন।  

হোয়াটস্যাপ থেকে প্রাপ্ত  পোস্টটিতে যে তিনটি শর্তের কথা উল্লেখ করা আছে, তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমরা পোস্ট থেকে কিছু  keyword বের করে আমরা google -এ খোঁজ করতে শুরু করি। এই hydroxychloroquine পাঠানোর ক্ষেত্রে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রক কিছু বিধিনিষেধ বজায় রেখেছিলো।  The Hindu থেকে ৭ই  এপ্রিল প্রকাশিত একটি রিপোর্টের  দ্বারা জানতে পারি বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বিবৃতি দিয়েছেন যে, বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশগুলিও এখন এই অতিমারীর আক্রমণে বিধস্ত হয়ে গেছে।  ভারতে Paracetamol ও hydroxychloroquine রপ্তানির ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা এনেছিল তা এখন কিছুটা স্থগিত রেখে প্রতিবেশী দেশগুলিকে এই ওষুধ সরবরাহ করা হবে। করোনার এই মহামারী আকার ধারণ করার কারণে যে দেশগুলি ভারতের কাছে সাহায্যের আশা করেছে, মানবতার খাতিরে সেই সব দেশগুলিকে প্রয়োজন মতো সাহায্য সরবরাহ করা হবে।  

Business StrandedLive MintBBC– এর  তরফ থেকে এই বিষয়ের উপর রিপোর্ট আমরা পাই।  কিন্তু এই সব রিপোর্টগুলির মধ্যে কোথাও ভারতের তিনটি শর্তের কথা বলা হয়নি। 

এর সাথে  U.S Food & Drug ও   Fierce Pharma নামক দুটি ওয়েবসাইট থেকে আমরা FDA থেকে ভারতের কিছু ওষুধের উপর নিষেধাজ্ঞার কথা জানতে পারি। U.S Food & Drug এর থেকে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে বেআইনি ও বিজ্ঞান সম্মতভাবে প্রমানে ব্যর্থ  কিছু ওষুধ আমেরিকাতে রপ্তানি করা যাবে না। আমেরিকাবাসীরা অননুমোদিত কিছু দেশ থেকে মেডিসিন অর্ডার করে সেগুলিকে সেবন করার পর অসুস্থতা অনুভব করতে থাকে।  তাই যাতে পরবর্তীকালে এই ওষুধ সেবন করার ফলে দেশবাসীর কোনো সঙ্গিন পরিস্থির মুখে না পড়তে হয় তাই এই ব্যবস্থা। এই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে এই বছরের ১৮ই  February.

অন্যদিকে Fierce Pharma -র তরফ থেকে যে ২৩সে মার্চের ২০২০  রিপোর্টটি আমরা পাই সেখানে বলা হয়েছে যে Ipca -র উপর থেকে FDA নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেবে।  ফলে এই ওষুধ তৈরী কোম্পানিটি আমেরিকাকে পর্যাপ্ত পরিমানে Paracetamol ও hydroxychloroquine রপ্তানি করতে পারে। এই   Fierce Pharma -র ২০১৭ সালের একটি রিপোর্ট আমরা পাই যেখানে Ipca API এর মুম্বাইয়ের রাতলাম ও বাকীদুটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্লান্ট মধ্যপ্রদেশের পিথাম্পুর ও সিলভাসার পিপারিয়া যেগুলি কিছু বছর ধরে আমেরিকা যুক্তরাষ্টের কড়া  তদারকি নিয়ন্ত্রণে ছিল ২০১৪ সালের একটি পরিদর্শন পরিচালন সমিতির পর্যবেক্ষণের পর ২০১৫ সালে এই কোম্পানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।  

কিন্তু কোনো স্থানেই এটি লেখা নেই যে এই নিষেধাজ্ঞা তোলার ক্ষেত্রে ভারত কোনো দাবি বা শর্ত প্রয়োগ করেছিল।  অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়া এই পোস্টটিতে যে দাবি গুলি আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এই কথা ঠিক যে ভারত চাপের মুখে পরে  ট্রাম্প শাসিত দেশকে এই ওষুধ রপ্তানির জন্য রাজি হয়েছে কিন্তু সেখানে কোনো প্রকার শর্ত রাখা হয়নি।  

আমাদের keyword সার্চের দ্বারা এই  Paracetamol ও hydroxychloroquine রপ্তনীর খবরের সাথে ভারতের তিনটি শর্ত স্বরূপ  যে দাবিগুলির উল্লেখ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।  

 

ব্যবহৃত টুলস

  • Google keyword search
  • Media Reports


ফলাফল:  ভ্রান্তিমূলক Misleading

(সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান checkthis@newschecker.in অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে।) 

Authors

With a penchant for reading, writing and asking questions, Paromita joined the fight to combat and spread awareness about fake news. Fact-checking is about research and asking questions, and that is what she loves to do.

Paromita Das
With a penchant for reading, writing and asking questions, Paromita joined the fight to combat and spread awareness about fake news. Fact-checking is about research and asking questions, and that is what she loves to do.

Most Popular