Authors
Claim: লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে বনগাঁর বিজেপি প্রার্থীকে ‘মদখোর, গাঁজাখোর’ বলে তোপ দাগলেন হরিনঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার।
Fact: অসীম সরকারের ভাইরাল অডিওটি পুরনো। আসন্ন লোকসভা ভোটের সঙ্গে কোনও যোগ নেই।
আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে হরিনঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকারের একটি অডিও ক্লিপ। যেখানে তাঁকে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের কড়া সমালোচনা করতে শোনা যাচ্ছে। শান্তনু ঠাকুরকে ‘মদখোর, গাঁজাখোর’ বলে সম্মোধন করতে শোনা যাচ্ছে অসীম সরকারকে। এখানেই শেষ নয়, তাঁর অনুগামীরা যাতে শান্তনু ঠাকুরকে ভোট না দেন, সেই নির্দেশ দিয়েছেন বলেও বিজেপি বিধায়ককে বলতে শোনা যায়। লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে অডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করে একজন লিখেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেস কে আর খেলতে নামতেই হবে না। কেন্দ্রীয় হাফ প্যান্ট মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে খেলে দিয়েছে তার দলের বিধায়ক অসীম। ভাবার বাইরে , ভাবার বাইরে ভাই, …”
রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সেই অডিও পোস্ট করে লেখা হয়েছে,, “”শান্তনু ঠাকুরকে কেউ ভোট দিবি না!” তাঁর অনুগামীদের এমন ভাষায় ঠিক এই নির্দেশই নাকি দিয়েছেন হরিণঘাটার BJP West Bengal-এর বিধায়ক অসীম সরকার! নিজে মুখে সেকথা স্বীকারও করেছেন তিনি! এমনকী, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গাঁজা সেবন ও মদ্যপানের অভিযোগ পর্যন্ত তুলেছেন?! পদ্মে নতুন কাঁটা অসীম সকারের এই ভাইরাল অডিয়ো! যে দলের এক নেতা, আর এক নেতা সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেন, সেই দলই নাকি গড়বে ‘বিকশিত ভারত’!”
একই ধরনের আরও পোস্ট দেখা যাবে এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
Fact Check/ Verification
তদন্তের শুরুতে ইন্টারনেটে কিওয়ার্ড সার্চ করলে দেখা যায়, ২০২০ সালের ১২ জুলাই একই অডিও ক্লিপ ফেসবুকে পোস্ট করেছিসেন একজন। ফলে এখান থেকে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, অডিওটি সাম্প্রতিক নয়।
এরপরের তদন্তে ২০ মার্চ আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন আমাদের নজরে পড়ে। ‘অসীম-খোঁচা, অডিয়ো ক্লিপে অস্বস্তিতে শান্তনু’-শিরোনামে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন হরিনঘাটার বিধায়ককে উদ্ধৃত করা হয়েছে। ভাইরাল অডিও প্রসঙ্কে আনন্দবাজারকে অসীম সরকার জানান, “২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আমাকে ভয় দেখিয়ে এই ধরনের কথা বলতে বাধ্য করেছে। ওরা বলেছিল, আমার স্ত্রীকে অনেক দূরের জেলার স্কুলে বদলি করে দেবে। ভোট এলেই এখন এই ধরনের পুরনো রেকর্ডিং ওরা চালাচ্ছে।”
এরপর আরও তদন্ত করলে দেখা যায় যে, ২০ মার্চ নিজের ফেসবুক প্রোফাইলেও ওই ভাইরাল অডিও সম্পর্কে সাফাই দিয়েছেন হরিনঘাটার বিজেপি বিধায়ক। তিনি জানিয়েছেন যে, ভাইরাল অডিওটি পুরনো, ২০১৯ সালের। এছাড়া তৃণমূল কংগ্রেসকে সরাসরি আক্রমণও করেছেন অসীম সরকার। তিনি ফের অভিযোগ করেছেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ভয় দেখিয়ে ২০১৯ সালে তাঁকে দিয়ে ওই অডিওটি রেকর্ড করিয়েছিলেন। তাঁকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্যও চাপ দিয়েছিলেন। পাশাপাশি বিজেপি বিধায়ক আরও জানান যে, তাঁর সঙ্গে শান্তনু ঠাকুরের কোনও বিবাদ নেই। তাঁরা একই পরিবারের সদস্য। আসন্ন লোকসভা ভোটে শান্তনু ঠাকুরের হয়ে কাজ করবেন তিনি এবং ফের একবার তাঁকে সংসদে পাঠাতে সাহায্য করবেন। একই সঙ্গে বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসকে পরাজিত করারও ডাক দেন হরিনঘাটার বিজেপি প্রার্থী।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলেও ভিডিয়োটি পোস্ট করেছিলেন অসীম সরকার।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে জিতে হরিনঘাটার বিধায়ক নির্বাচিত হন অসীম সরকার। অর্থাৎ, ২০১৯ বা ২০২০ সালে তিনি বিজেপি বিধায়ক নির্বাচিত হননি।
Conclusion
অসীম সরকারের ভাইরাল অডিওটি আসল সমযকালের খোঁজ না পেলেও তদন্ত থেকে এটা স্পষ্ট যে, সেটা পুরনো। আসন্ন লোকসভা ভোটের সঙ্গে কোনও যোগ নেই।
Result: Missing Context
Sources
Report published on Anandabazar Online
Video posted by Amis Sarkar
Newschecker’s own investigation