রামপুরহাট গণহত্যার আবহে সোশ্যাল মিডিয়াতে এক ব্যক্তির পোস্ট আমাদের সামনে আসে যেখানে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিমের (Md. Salim) ছবি দিয়ে লিখেছে নন্দীগ্রামে বাফ্রন্টের হার্মাদ বাহিনীর কারণে তৃণমূল নেত্রীকে আটকানো হয়েছিল, কিন্তু রামপুরহাটে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়নি মহঃ সেলিমকে। তিনি নাকি অনায়াসে রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে গিয়েছিলেন।

রামপুরহাটের (Rampurhat Killing) বগটুই গ্রামে তৃণমূল উপ-প্রধানের মৃত্যুর পর কিছু ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয় এবং এতে প্রায় ৮-১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী নিজে বগটুই গ্রামে যান গতকাল এবং মৃতদের পরিবারের সাথে কথা বলেন। সেখানে সবকিছু সরেজমিনে দেখে সিদ্ধান্ত নেন যে যাদের পরিবারের সাথে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে তাদের থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কোটা থেকে গ্রুপ D র চাকরি ও এক বছর ১০ হাজার টাকা করে মাইনে দেওয়া হবে। এছাড়াও যাদের বাড়ি আগুনে ধূলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে তাদের বাড়িরই মেরামতির জন্য ১-২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার পিছু ৫লক্ষ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

অন্যদিকে বগটুই গ্রামে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেনকে (Anarul Arrested) গ্রেপ্তারের আদেশ দেন মমতা। বলেন যে দোষী সে যেখানেই থাকুক না কেন তাকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হবে এবং এর বিরুদ্ধে প্রথম থেকে অভিযোগ উঠেছিল। এর কিছু ঘন্টা পর তারাপীঠ থেকে ধরা পরে আনারুল।
Fact check / Verification
রামপুরহাটে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়নি মহঃ সেলিমকে এই দাবিতে যে দুটি ছবি ভাইরাল হয়েছে তার মধ্যে একটি ছবি নন্দীগ্রাম ঘটনার। প্রথম ছবিটি যেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে নন্দীগ্রামে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় এবং পরে তিনি বাইকে করে নন্দীগ্রামের ঘটনাস্থলে পৌঁছন।

রামপুরহাটে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়নি মহঃ সেলিমকে এই দাবির সাথে সেলিমের যে ছবিটি ছড়িয়েছে তা আমরা ওনারই ফেসবুকের একটি ভিডিওটি থেকে পেয়েছি। রামপুরহাটের মৃত উপপ্রধানের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে মহঃ সেলিম বলেন কেন মিডিয়ার সাহস হচ্ছে না এই বাড়িটির দেখানোর? এরাই তো প্রত্যেকটা গ্রামে এই ভাবে সাম্রাজ্য তৈরী করেছে, এই টাকা দিয়ে পালিশ পোষা হয়, খুনোখুনি হয় আর অসহায় মানুষের প্রাণ যায়’ .
কিন্তু রামপুরহাটে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়নি মহঃ সেলিমকে এই দাবিটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে আমাদের অনুসন্ধানে কারণ, যখন আমরা গুগলে এই দিনের ঘটনার খবরের অনুসন্ধান করি আনন্দবাজার পত্রিকা, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার ২৩শে মার্চের রিপোর্ট পাই। রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের পথে কলকাতা থেকে মঙ্গলবার রাতেই যাত্রা করেছিলেন বিমান বসু ও মহঃ সেলিম। পরদিন সকালে গ্রামে ঢোকার সময় বাধা পান। কিন্তু যাবতীয় বাধাকে তোয়াক্কা না করেই প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম।

রামপুরহাটে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়নি মহঃ সেলিমকে দাবিটি সঠিক নয়
বাইকে চেপে বগটুই গ্রামে পৌঁছানোর পর পুলিশের বারণ না শুনেই জ্বলে যাওয়া বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। মিডিয়ার সামনে বলেন, যখন আগুন জ্বলছিল তখন পুলিশের কর্তাব্যক্তিরা কোনো আমল দেয়নি। বালি চুরির টাকায় এই পুলিশরা গাড়ি চড়ে, তাদের বউরা দাবি গয়না পরে। যখন গুন্ডারা এসেছিলো বন্দুক নিয়ে, তখন পুলিশ চারটে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়েছিল, এরা অপদার্থ, অপোগন্ড।
Conclusion
আমাদের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে রামপুরহাটে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়নি মহঃ সেলিমকে দাবিটি সঠিক নয়। বগটুই গ্রামে ঢোকার মুখে বাধা পেয়ে সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিম বাইকে করে ঘটনাস্থলে পৌঁছন।
Result: Misleading claim
Our Sources
MD. Salim official Facebook posts – https://www.facebook.com/salimcomrade/videos/684137229304945
https://www.facebook.com/salimcomrade/videos/977322136506296
Anandabazar Patrika – https://www.anandabazar.com/west-bengal/purulia-birbhum-bankura/rampurhat-clash-mohammed-salim-criticizes-police-and-government-after-reaching-bogtui-village-dgtld/cid/1335019
Indianexpress Bangla – https://bengali.indianexpress.com/politics/birbhum-violence-cpim-leaders-stopped-to-enter-bogtui-village-bjp-team-on-the-way-to-spot-423302/
সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান [email protected] অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে। এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us -র মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন ও ফর্ম ভরতে পারেন ।