Authors
Claim: ক্ষমতায় এলে সবার আগে শুভেন্দু-কে লাথি মেরে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে:দিলীপ ঘোষ
Fact: শুভেন্দু অধিকারীকে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেননি দিলীপ ঘোষ। ভাইরাল পোস্টকার্ডের উদ্ধৃতিটি ভুয়ো।
লোকসভা ভোটের আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে বিজেপি নেতা তথা বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের বক্তব্য সম্বলিত একটি পোস্ট কার্ড। যেখানে দিলীপ ঘোষকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, “ক্ষমতায় এলে সবার আগে শুভেন্দু-কে লাথি মেরে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে”। পোস্টকার্ডটি ফেসবুকে পোস্ট করে একজন লিখেছেন, “রাজনৈতিক মতাদর্শের অমিল থাকলেও এই জন্যই আমার দিলীপ ঘোষ কে বড্ড ভালো লাগে”। (আর্কাইভ লিঙ্ক)
পোস্টের কমেন্ট দেখে বোঝা যায় অনেকই দিলীপ ঘোষের উদ্ধৃতিটিকে বিশ্বাস করেছেন এবং তাঁকে সমর্থন করেছেন।
Image 2
Fact Check/ Verification
রাজ্য বিজেপির অন্দরে কান পাতলেই দিলীপ-শুভেন্দু দ্বন্দ্বের কথা শোনা যায়। সূত্রের খবর, দুই নেতার মধ্যেকার দূরত্ব মেটাতে একবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও ময়দানে নামতে হয়েছিল। তাই দিলীপ ঘোষ শুভেন্দু অধিকারীকে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে বললে তা নিশ্চয়ই বড় খবর হতো। তাই, ভাইরাল পোস্টকার্ডে লেখা উদ্ধৃতিটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আমরা প্রথমে ইন্টরনেটে কিওয়ার্ড সার্চ করি। কিন্তু দিলীপ ঘোষের এমন কোনও উদ্ধৃতি সম্বোলিত প্রতিবেদন আমাদের নজরে পড়েনি।
বরং আমরা দেখতে পাই, চলতি বছরের মার্চ মাসে আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেওয়া একটা সাক্ষাৎকারে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছিলেন যে, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কোনদিনই তাঁর কোনও শত্রুতা ছিল না।
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে আসন বদল হয়েছে দিলীপ ঘোষের। জন্মভূমি মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতিকে বর্ধমান-দুর্গাপুর থেকে প্রার্থী করেছে গেরুয়া শিবির। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, এর পিছনেও নাকি শুভেন্দু অধিকারীর কারসাজি ছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে বারবার এই দাবি করা হয়েছে।
তবে এর পরেও প্রকাশ্যে পরস্পরের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলতে দেখা যায়নি দুই নেতাকে। সম্প্রতি অধিকারী পরিবারের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে দিলীপ ঘোষকে। সৌমেন্দু অধিকারীকে কাঁথি থেকে বিজেপি প্রার্থী করলে, পরিবারতন্ত্রের অধিযোগ উঠেছিল। সেই সময় শুভেন্দু, সৌমেন্দুদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী।
এমনকী, ‘শান্তিকুঞ্জ’-এর বাসিন্দাদের (শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি) পাশে দাঁড়িয়ে কড়া ভাষায় সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আক্রমণ শানিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। যা নিয়ে উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি।
২০২৩ সালের ৩১ মার্চ বাংলাহান্টের একটি বিতর্ক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবির বিরোধিতা করে শুভেন্দু অধিকারীর শাস্তির সমালোচনা করেও মুখ খুলেছিলেন দিলীপ ঘোষ।
লোকসভা ভোটের প্রায় প্রতিটা প্রচার সভাতেই শুভেন্দু অধিকারীকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে, বিজেপি এ রাজ্য ক্ষমতায় এলে রাজনৈতিক শহিদ পরিবারকে ‘সংগ্রামী ভাতা’ দেওয়া হবে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার সেই প্রস্তাবকেও সমর্থন করেছেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী।
২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর ইটিভি ভারতের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে লেখা হয়েছিল যে, দিলীপ ঘোষকে তাঁর নেতা বলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে তাঁর জয়ের পিছনে তৎকালীন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিশাল অবদান ছিল বলেও জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা।
Conclusion
সুতরাং এখন এটা স্পষ্ট যে, শুভেন্দু অধিকারীকে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেননি দিলীপ ঘোষ। ভাইরাল পোস্টকার্ডের উদ্ধৃতিটি ভুয়ো।
Result: False
Source
Report by Anandabazar. Com
Report by Bangla Hunt and Hindustan Times Bangla
Report by Zee 24 Ghanta and ETV Bharat