Newchecker.in is an independent fact-checking initiative of NC Media Networks Pvt. Ltd. We welcome our readers to send us claims to fact check. If you believe a story or statement deserves a fact check, or an error has been made with a published fact check
Contact Us: checkthis@newschecker.in
Fact Check
নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকায় ৪২ জন ভোটারের পিতৃ পরিচয়ের স্থানে, বিহারের বাসিন্দা রামকমল দাস নামে একজন ব্যক্তির উল্লেখ রয়েছে।
২০২৩ সালের বারাণসী পুর নির্বাচনের ভোটার তালিকা, যেখানে ৪৮ জন ভোটারের বাবা হিসেবে মহন্ত স্বামী রামকমল দাসের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, সেটা আসলে তাঁর শিষ্যদের নাম।
নির্বাচন কমিশন বিহারে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (Bihar Special Intensive Revision-SIR) ঘোষণা করার পর থেকেই বিরোধীরা ‘ভোট চুরি’র অভিযোগ করছে। ৭ অগস্ট কংগ্রেস নেতা এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী একটি সংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা কারচুপির অভিযোগ আনেন।
এই পরিস্থিতিতে, ভোটার তালিকার একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্তমানে খুব ভাইরাল হচ্ছে। ছবিটি পোস্ট করে অনেকেই দাবি করছেন যে, ৪২ জন ভোটারের পিতৃ পরিচয়ের স্থানে, বিহারের বাসিন্দা রামকমল দাস নামে একজন ব্যক্তির উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জন সন্তানের জন্ম একই বছরে হয়েছে এবং এদের সকলের বয়স ৩৭ বছর। সেই ভোটার তালিকার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারকারীরা নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

ভোটার তালিকার ভাইরাল ছবির পিছনের সত্যতা জানতে, আমরা প্রথমে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড ব্যবহার করে গুগলে অনুসন্ধান করি। সেই সময়, ২০২৩ সালের মে মাসে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন আমাদের নজরে পড়ে। যেখানে ভাইরাল ভোটার তালিকা সম্পর্কিত তথ্য রয়েছে।
৪ মে, ২০২৩ তারিখে প্রকাশিত ETV Bharat-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই ভোটার তালিকাটি ২০২৩ সালে বারাণসী পুরসভা নির্বাচনের সময় প্রকাশিত হয়েছিল এবং সেটি বারাণসী পুরসভার ভেলুপুরের ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের তালিকা। যেখানে রামকমল দাস নামে একজন ব্যক্তির নাম, ৪৮ জন ভোটারের বাবা হিসাবে উল্লেখিত ছিল। প্রতিবেদনে, উক্ত ব্যক্তিকে বারাণসীর খোজওয়ায় অবস্থিত রাম জানকি মঠের মহন্ত স্বামী রামকমল দাস বেদান্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
ওই প্রতিবেদনে, স্বামী রামকমল দাসের প্রতিনিধি রামভারতকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছিল যে, স্বামীজি অবিবাহিত। কিন্তু আশ্রমে গুরু-শিষ্যর ঐতিহ্য অনুসরণ করা হয়। সেই কারণে, ওই আশ্রমে বসবাসকারী সমস্ত শিষ্য স্বামীজিকে তাদের গুরু বা পিতা বলে মনে করেন। তাই ওই ভোটার তালিকায় গুরুর নামকে, তাঁরা পিতৃ পরিচয় হিসেবে ব্যবহার করেছিল।
প্রতিবেদনে অখিল ভারতীয় সন্ত সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বামী জিতেন্দ্রানন্দ সরস্বতীকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছিল যে, উত্তরাধিকার আইনের অধীনে, গুরু-শিষ্য ঐতিহ্যে একজন শিষ্যের স্থান সন্তানের সমান বলে বিবেচিত হয়। রামকমল দাস বেদান্তি আশ্রমের একজন ভোটার। তাই তাঁর শিষ্যরাও একই যুক্তিতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন।
Amar Ujala, ABP News– সহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও বলা হয়েছিল যে, ভোটার তালিকার সমস্ত নাম বেদান্তি মহারাজের শিষ্যদের। তালিকাটি ওই সময়েও ভাইরাল হয়েছিল এবং লোকেরা তখনও এটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। সমাজবাদী পার্টির তরফে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছেও বিষয়টি বিবেচনার জন্য আবেদন করা হয়েছিল।
এরপর Newschecker-এর তরফে, মহন্ত স্বামী রামকমল দাস বেদান্তির মঠের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মঠের তরফে রামভারত শাস্ত্রী জানান যে, স্বামী রামকমলের সন্তান হিসেবে ভোটার তালিকায় যেসব নাম উল্লেখ রয়েছে, তাঁরা আসল সন্তান নয়, মঠের শিষ্য। মঠের নিয়ম অনুসারে, পিতার নামের পরিবর্তে গুরুর নাম লেখা হয়।
রামভারত শাস্ত্রী আরও জানান যে, তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা মঠেই থাকেন এবং তাঁদের গুরুকে বাবা বলে মনে করেন। তাঁদের মার্কশিট এবং অন্যান্য শিক্ষাগত নথিতেও, গুরুর নামই বাবার নাম হিসাবে উল্লেখিত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আগে আরও বহু শিষ্যের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল, কিন্তু এখন সেটি সংশোধিত হয়েছে।
এরপর, আমরা উত্তরপ্রদেশ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে ২০২৩ সালের পুরসভা নির্বাচনের সময় প্রকাশিত বারাণসী পুরসভার ৫১ নম্বর ভেলুপুর ওয়ার্ডের ভোটার তালিকাটি পরীক্ষা করি এবং দেখতে পাই যে, বাড়ি নম্বর বি, ২৪/১৯ এর অধীনে মোট ৫১ জন ভোটারের নাম নথিভুক্ত রয়েছে। যার মধ্যে ৪৮ জন ভোটারের বাবা হিসেবে রামকমল দাসের নাম লেখা রয়েছে। তার মধ্যে ১৩ জনের বয়স ৩৭ বছর, পাঁচজনের বয়স ৩৯ বছর, চারজনের বয়স ৪০ বছর, বাকিদের বয়স ৪২ বছর।

উত্তর প্রদেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) একটি পুরনো এক্স পোস্ট নজরে পড়ে, যা ১২ মার্চ, ২০২৫ তারিখে পোস্ট করা হয়েছিল। সেখানে ভাইরাল তালিকা সম্পর্কে স্পষ্ট উত্তর দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল যে, ছবিতে দেখানো ভোটার তালিকাটি পুর নির্বাচনের। পুর নির্বাচনের ভোটার তালিকা ভারতের নির্বাচন কমিশন দ্বারা প্রস্তুত করা হয় না । নির্বাচন কমিশন বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনের জন্য পৃথক ভোটার তালিকা তৈরি করে।
সিইও আরও বলেন যে, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, কোনও ধর্মীয় মঠ/আশ্রমের ক্ষেত্রে, সেখানে বসবাসকারী ব্যক্তি বা আশ্রমিকদের আসল বাবার নাম নয়, বরং তাঁদের গুরুর নাম ভোটার তালিকায় উল্লেখ করা হয়।
আমাদের তদন্ত থেকে এটা স্পষ্ট যে ২০২৩ সালের বারাণসী পুর নির্বাচনের ভোটার তালিকা, যেখানে ৪২ জন ভোটারের বাবা হিসেবে মহন্ত স্বামী রামকমল দাসের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, সেটা আসলে তাঁর শিষ্যদের নাম।
Sources
ETV Bharat report , May 4, 2023
Amar Ujala report, May 4, 2023
ABP News report, May 5, 2023
Jagran report, May 5, 2023
CEO, UP X-Post, March 12, 2025
Rahul Gandhi YouTube Video
Phonetic Conversation with Math Prabandhak Rambharat Shastri
Tanujit Das
December 3, 2025
Tanujit Das
November 30, 2025
Runjay Kumar
November 29, 2025