Authors
Claim: ভারতীয় সংগ্রহশালার একটি নথিতে উল্লেখ করা আছে, মহাত্মা গান্ধী তৎকালীন ইংরেজ সরকারের কাছ থেকে মাসে ১০০ টাকা ভাতা পেতেন
Fact: শুধু মহাত্মা গান্ধী নন, ব্রিটিশরাজের তরফ থেকে অনেক ভারতীয় রাজনৈতিক কারাবন্দিকেই মাসোহারা প্রদান করা হতো। তবে গান্ধী ব্রিটিশদের কাছ থেকে ১০০ টাকা মাসোহারা নিতে অস্বীকার করেন
হোয়াট্সঅ্যাপ মারফৎ আমাদের কাছে একটি বেশ পুরোনো নথি আসে যার সাথে দাবি করা হয়েছে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ওরফে গান্ধীজিকে ইংরেজ সরকার প্রতিমাসে ১০০ টাকা করে ভাতা দিতো ওনার স্বাস্থ্যের খরচ বাবদ।নথিতে National Archives Of India কথাটিও লেখা রয়েছে।
Fact check / Verification
গুগলে খোঁজার সময় আমরা ইতিহাসবিদ ডঃ বিক্রম সম্পদের একটি টুইট পাই। ২০২২ সালের ৩রা অক্টোবরের এই টুইটটি অন্য একটি টুইটের উত্তর। তিনি এখানে লিখেছেন মহাত্মা গান্ধীকে ১৯৩০ সালে নিজের খরচ বাবদ ১০০ টাকা করে মাসিক খরচ দেওয়া হতো, সূত্র জাতীয় সংগ্রহসালা।
ন্যাশনাল আর্কাইভের লিংক আমরা পাই এই টুইটে। ১৯৩১ সালে জেলে থাকা কালীন তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সময় বোম্বে রেগুলেশন ১৮২৭ এর নিয়ম অনুসারে ১০০ টাকা করে গান্ধীজির মাসে খরচ বাবদ কোম্পানির থেকে আসতো।
Quora তেও আমরা একই চিঠি পাই, যা কয়েকমাস আগে নিখিল চৌধুরী শেয়ার করেছেন।
ন্যাশনাল আর্কাইভ ছাড়াও আমরা ঐতিহাসিক অশোক পান্ডের ভিডিও পাই। টুইটারে ২০২২ সালের ৬ই অক্টোবর নিজের টুইটার প্রোফাইল থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন।
ডঃ বিক্রম সম্পদের টুইটের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন বহু মানুষ গান্ধীজিকে নিয়ে অনেক পড়াশোনা করে ফেলোশিপ পেয়েছে, অনেক পুরস্কার পেয়েছে, কিন্তু কেউ ডঃ বিক্রমের এই নথির সত্যতা যাচাই করেনি। ১৩ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের ইউটুউব ভিডিওতে অশোক পান্ডে দাবি করেছেন কিছু মানুষ ইচ্ছাকৃত ভাবে গান্ধী জয়ন্তীর দিন গান্ধীজিকে নিয়ে ভুল, বিভ্রান্তিকর দাবি সোশ্যাল মিডিয়াতে উপস্থাপন করে।
ভিডিওটির ৩মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের মাথায় ঐতিহাসিক জানান, সেই সময় কোম্পানি সরকার একটি আইন পাস্ করে যেখানে জেলে থেকে সমস্ত কয়েদি, বিপ্লবীদের তাদের আনুসাঙ্গিক খরচ বাবদ কিছু টাকা ধার্য করা হয়।আইন অমান্য আন্দোলনের পর যখন গান্ধীজিকে ইয়েরওয়াড়া জেলে রাখা হয় তখন ওনার সাথে ওনার সাথী সঙ্গীদের জন্যও একটি অংকের টাকা ধার্য হয়। আমরা ব্রিটিশ সরকারের লেখা ভাইরাল চিঠিটি একটি সরকারী ওয়েবসাইটে খুঁজে পাই।
এই ওয়েবসাইটে আরও বেশ কিছু চিঠি ও নথি পাওয়া যায় যার থেকে বোঝা যায় বেশ কিছু রাজনৈতিক কারাবন্দি সেই সময় ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে মাসোহারা পেতেন। এই টাকাটি শুধুমাত্র মহাত্মা গান্ধীকে দেওয়া হতো এমন নয়, সেই সময় জেলে থেকে আরো অন্যান্য কয়েদীরাও এই টাকা পেতেন তাদের দৈনন্দিন খরচের জন্য।
মহাত্মা গান্ধীর আত্মজীবনী থেকে জানা যায় তাকে ব্রিটিশ সরকারের তরফ থেকে গৃহবন্দী অবস্থায় ১০০ টাকা মাসোহারা প্রদান করার প্রস্তাব দিলেও, গান্ধীজি সেই টাকা নিতে অস্বীকার করেন এবং শুধু তার খাবারের খরচ বাবদ টাকা নিতে রাজি হন।
Conclusion
প্রাপ্ত তথ্য ও অনুসন্ধান থেকে আমরা বলতে পারি ১৯৩১ সালে জেলে থাকার সময় ইংরেজ সরকার থেকে একমাত্র মহাত্মা গান্ধীকে ১০০ করে পেনশন দেওয়া হতো এই দাবিটি অর্ধ সত্য। সেই সময়কার ব্রিটিশ সরকারের নিয়ম অনুসারে সমস্ত কয়েদিদের জন্য সরকার থেকে একটি অংকের টাকা ধার্য করা হয়েছিল তবে গান্ধীজি সেই টাকা নিতে অস্বীকার করেন।
Result- Partly False
Sources
YouTube Video
সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান checkthis@newschecker.in অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে। এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us -র মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন ও ফর্ম ভরতে পারেন।