কাতারে বিশ্বকাপ খেলার মাঠের পাশে আগুন ধরে যায় এবং এই আবহে ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি ফুটবল খেলার মাঠে গোলপোস্টের সামনে আগুন ধরে গিয়েছে এবং কালো ধোঁয়ায় দর্শক আসন ঢেকে ফেলেছে। ভিডিওটিকে শেয়ার করে দাবি করা হয়েছে বিশ্বকাপের খেলার মাঠে আগুন ধরে যাওয়ার কারণে কাতারে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে।


Fact check / Verification
কাতারে বিশ্বকাপ খেলার মাঠে আগুন ধরার ঘটনার আবহে যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেটি জার্মানির। ভাইরাল ভিডিওটিকে আমরা কিছু ফ্রেমে ভাগ করে নিয়ে গুগল রিভার্স ইমেজ করি। এই পর্যায়ে আমাদের সামনে The Guardian এর লিংক পাই। ২০১৮ সালের ১২ই মের রিপোর্টে বলা হয়েছে জার্মানির নিজস্ব ফুটবল দল হ্যামবুর্গ ও মনচেংগ্লাদবাখ বুন্দেশলিগায় একটি ম্যাচে মুখোমুখি হয়। এই ম্যাচে ২-১ গোলে হ্যামবুর্গ জয় লাভ করে। কিন্তু তারপরেও বুন্দেশলিগা থেকে নির্বাসন দেওয়া হয়। এখানেই ক্ষোভে ফেটে পরে হ্যামবুর্গের সমর্থকরা।

এরপর গুগলে কীওয়ার্ড দ্বারা খোঁজার পর ESPN ও Metro ২০১৮ সালের ১২ ও ১৩ই মের রিপোর্ট পাই। ১৯৬৩ সাল থেকে জার্মানি ঘরের মাঠে লীগ খেলে আসছে। বরুসিয়া মনচেংগ্লাদবাখকে ২-১ গোলে পরাজিত করেছিল কিন্তু ৫৫ বছরে প্রথম বারের মতো হ্যামবুর্গকে নির্বাসিত করা হয়। এরপর মাঠেই শুরু হয় হ্যামবুর্গ অনুগামীদের বিক্ষোভ। মাঠে অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয় যার ফলে ওই সিজেনের ফাইনাল ম্যাচ বিঘ্নিত হয়। কালো ধোঁয়ায় মাঠের একাংশ ও দর্শক আসনের দিক ঢেকে যায়, মাঠে পুলিশ ঢুকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
কাতারে বিশ্বকাপ খেলার মাঠে আগুন ধরার ঘটনাটি দুদিন আগে ঘটে। কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামের কাছে একটি নির্মাণের কাজ চলতে থাকা বিল্ডিংয়ে আগুন ধরে যায়। এই স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনা ও মেক্সিকোর খেলা হওয়ার কথা ছিল। Hindustan Times ও The Guardian এর ২৬শে নভেম্বরের রিপোর্ট অনুযায়ী – কাতারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে লুসাইল শহরের থেকে ৩.৫ কিলোমিটার দূরত্বে একটি দ্বীপে এই আগুন লাগে স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে। এই লুসাইলে অবস্থিত স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের বেশকিছু ম্যাচ খেলা হয়েছে এবং সেই দিন ছিল আর্জেন্টিনা ও মেক্সিকোর খেলা। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী স্টেডিয়ামে নয়, খেলার মাঠ থেকে অনেক দূরেই আগুন ধরেছিলো।

আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে স্টেডিয়ামের আশপাশ কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। দূরের বাজার থেকেও এই কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিলো। যদিও এই ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বলেই জানিয়েছে কাতার প্রশাসন।
Conclusion
আমাদের পর্যবেক্ষণে প্রমাণিত হয়েছে কাতারে বিশ্বকাপ খেলার মাঠে আগুন ধরার ঘটনার আবহে অপ্রাসঙ্গিক ভিডিও ছড়ালো ফেসবুকে। যে ভিডিওটিকে পোস্ট করে দাবি করা হয়েছে ভিডিওটি কাতারের বিশ্বকাপের মাঠে আগুন ধরে যাওয়ার, আসলে সেটি ২০১৮ সালের জার্মানির ঘরের মাঠে দেশের দুটি ফুটবল দলের মধ্যে ম্যাচের ভিডিও।
Result: False
Our Sources
The Gurdian report published on 12th May 2018
ESPN report of 13th May 2018
Hindustan Times report published on 26th Nov 2018
সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান [email protected] অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে। এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us -র মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন ও ফর্ম ভরতে পারেন।