মসজিদের সামনে আতশবাজি পোড়ানোর অভিযোগে, দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ! আর এরপরই ঈদের আগে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মালদহের মোথাবাড়ি। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় ১৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ৬০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই দাবি করেছেন যে, বেছে বেছে হিন্দুদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফেসবুকে অনেকে লিখেছেন, “মালদার মোথাবাড়িতে মুসলিম সম্প্রদায়ের যে ছেলেটি প্রকাশ্যে পুলিশের সামনে সোস্যাল মিডিয়ায় মোথাবাড়ি কে হিন্দু শুন্য করার হুমকি দিল, যেসব মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ গুলো বিনা প্ররোচনায় পুলিশের সামনে হিন্দুদের বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট, গাড়ি ভাঙচুর করল, তাদের কাউকে গ্রেফতার না করে, যেসব হিন্দুদের বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট, গাড়ি ভাঙচুর হলো তাদের মধ্যে 21 জনকে গ্রেফতার করেছে সুরাবর্দি খার পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া সেই 21 জন নির্যাতিত হিন্দুদের নাম দেখে নিন…!”

একই অভিযোগ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র রাজর্ষি লাহিড়ি ও অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ।
Fact Check/ Verification
ভাইরাল দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য, নিউজচেকার তরফে প্রথমে মালদহ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার সম্ভব জৈনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ভাইরাল দাবিটিকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন এবং বলেন যে মোথাবাড়ির সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এখন পর্যন্ত মোট ৬৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের মধ্যে কেবল হিন্দুই নয়, অন্য সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরাও রয়েছে।
তিনি নিউজচেকারের সাথে অভিযুক্তদের তালিকাও শেয়ার করেন। যেখানে জানা গিয়েছে যে ধৃতদের মধ্যে হিন্দু ছাড়া, অন্য ধর্মের ১৩ জনের নাম রয়েছে। যাদের ২৮ মার্চ, ২০২৫ তারিখে আদালতে পেশ করা হয়েছিল। যেহেতু, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এখনও প্রমাণিত হয়নি, তাই নিউজচেকার নিরাপত্তার কারণে তাদের নাম এবং পরিচয় গোপন রাখছে।

আমরা আরও যাচাই করে দেখেছি যে, ২৯শে মার্চ ২০১৫ তারিখে, ২১ জন অভিযুক্তের আরও একটি দলকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। যাদের নাম ও পরিচয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
৩১শে মার্চ, ২০২৫ তারিখে, মালদা জেলা পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ভাইরাল দাবিটিকে বিভ্রান্তিকর বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তারা জানিয়েছে যে, ২৭ মার্চ দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে পাথর ছোঁড়ার ঘটনার পর, অফিসাররা হস্তক্ষেপ করে এবং জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে। উভয়পক্ষের পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে, ২৮ মার্চ, নতুন করে অশান্তি শুরু হয়। যখন একটি গোষ্ঠী, অন্য গোষ্ঠী এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে আবার পাথর ছোঁড়া শুরু করে। তখন পুলিশ অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করে এবং আরও ২১ জনকে গ্রেফতার করেয়। মোথাবাড়িতে সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৬৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Conclusion
এটা স্পষ্ট যে মালদহের মোথাবাড়ির সংঘর্ষের ঘটনায় শুধুমাত্র হিন্দুদের গ্রেফতার করা হয়েছে, এই দাবিটি বিভ্রান্তিকর, কারণ ধৃতদের মধ্যে অন্য সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরাও রয়েছেন।
Sources
Telephonic conversation with Sambhab Jain, Additional Superintendent of Malda District Police.
Facebook post by Malda District Police
ফ্যাক্ট-চেক এবং সমস্ত আপডেটের জন্য আমাদের WhatsApp চ্যানেল ফলো করুন: https://whatsapp.com/channel/0029Va23tYwLtOj7zEWzmC1Z