Newchecker.in is an independent fact-checking initiative of NC Media Networks Pvt. Ltd. We welcome our readers to send us claims to fact check. If you believe a story or statement deserves a fact check, or an error has been made with a published fact check
Contact Us: checkthis@newschecker.in
Fact Check
একজন হিন্দু মেয়েকে মুসলিম প্রেমিক কর্তৃক অত্যাচারের ছবি।
কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শ্বেতা পুন্দিরের স্ন্যাপচ্যাট লেন্স ব্যবহার করে তৈরি ছবিকে 'লাভ জিহাদ' এবং সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে, একটি ভুয়ো দাবির সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে।
মুখে রক্ত জমে কালশিটে পড়েছে, নির্যাতনের চিহ্ন স্পষ্ট। সোশ্যাল মিডিয়ায় লাল পোশাক পরা একটি মেয়ের এমনই ছবি অনেকেই পোস্ট করেছেন এবং দাবি করেছেন যে, লাভ জিহাদের (Love Jihad)-এর ফাঁদে পড়েন হিন্দু মেয়েটি। বাড়ির অমতে, পালিয়ে গিয়ে, একটি মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করেন। তারপর তাঁর উপর অত্যাচার শুরু করে ছেলেটি। বর্তমানে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এবং মেয়েটিও পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

গুগল লেন্সের সাহায্যে ভাইরাল ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে দেখা যায় যে, ২০২৫ সালের পয়লা অগাস্ট, শ্বেতা পুন্দির নামের একজন ডিজিটাল কনটেন্ট ক্রিয়েটর একই ছবি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছিলেন। তিনি হার্ট ইমোজির সঙ্গে ছবিটি পোস্ট করেছিলেন এবং লিখেছিলেন, ‘Pyaar karta hai toh marta hai’।

এরপর দেখা যায়, ২ অগাস্ট একই লাল রঙের পোশাকে আরও কয়েকটি ছবি পোস্ট করেছিলেন শ্বেতা পুন্দির। কিন্তু তখন তাঁর মুখে কোনও লাল বা কালশিটে দাগ দেখতে পাওয়া যায়নি।
একই সময়ে, ২রা আগস্টের একটি ভিডিয়োতে , তার মুখে একই আঘাতের চিহ্ন দেখা যায় এবং সেখানে তিনি ব্যঙ্গাত্মকভাবে সেইসব মেয়েদের প্রশ্ন করে, যারা প্রেমে হিংসাকে ন্যায্যতা দেয় এবং তারপর ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে, যে ব্যক্তি তোমাকে সঠিক অর্থে ভালোবাসে, তিনি কখনই ভালবাসার মানুষটির উপর হাত তুলবে না।

এই ভিডিয়োটি মনোযোগ সহকারে দেখলে বোঝা যায় যে, শ্বেতা পুন্দির মুখের ভাব পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে, তার চোখ এবং গালের দাগও পরিবর্তিত হচ্ছে। এর ফলে আমাদের সন্দেহ হয়েছিল যে সম্ভবত সেখানে কোনও ডিজিটাল ফিল্টার ব্যবহার করা হয়েছে।
৪ঠা আগস্ট পোস্ট করা একটি ভিডিয়োতেও আমরা একই রকম অস্বাভাবিকতা দেখতে পাই। যখন শ্বেতা তার গালে হাত দেয়, তখন লাল দাগগুলি অদৃশ্য হয়ে যায়। সাধারণত, ইনস্টাগ্রাম বা স্ন্যাপচ্যাটের ফিল্টারগুলোতে এই ধরনের প্রভাব দেখা যায়। স্ন্যাপচ্যাটের এই ফিল্টারগুলোকে ‘লেন্স’ বলা হয়।

এরপর, যখন আমরা স্ন্যাপচ্যাটে ‘Injured face’ এর মতো কিওয়ার্ড সার্চ করি এবং ‘mmooort9′ নামের লেন্সটি খুঁজে পাই। যা রুমিন তাবুক তৈরি করেছেন। এটি একটি বিশেষ ধরণের লেন্স, সহজ কথায়, একটি ফিল্টার, যা মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখায়।

বেশ কয়েকজন ব্যবহারকারী সেই লেন্স ব্যবহার করেছে, সেই ভিডিয়োটিও আমরা দেখতে পেয়েছি। যার মধ্যে শ্বেতা পুন্ডিরের দুটি ভিডিয়ো রয়েছে – যার একটিতে তাকে ঠিক সেই পোশাকটি পরে দেখা যাচ্ছে, যার ছবি ভাইরাল হয়েছে।

এছাড়া, একই ভাবে তৈরি অন্যান্য ভিডিয়োতে অনেকের মুখে একই রকম আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।

আমরা নিজেরা এই স্ন্যাপচ্যাট লেন্সটি ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি এবং দেখতে পেয়েছি যে সেটি শ্বেতা পুন্দিরের ভাইরাল ছবি এবং অন্যান্য ভিডিয়োতে থাকা, একই আঘাতের চিহ্নের মতো।
এরপর, Newschecker-এর তরফে শ্বেতা পুন্দিরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তিনি নিশ্চিত করেন যে, ছবিটি স্ন্যাপচ্যাট লেন্সের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছিল এবং জানান যে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন।
এখানেই শেষ নয়, তাঁর ছবির সঙ্গে করা দাবি অস্বীকার করে বলেন, “আমি স্ন্যাপচ্যাট লেন্স দিয়ে তোলা একটি ছবি পোস্ট করেছি। আমার ধারণা ছিল না যে এটি সোশ্যাল মিডিয়ায় এভাবে ভাইরাল হবে।”
এখান থেকে স্পষ্ট যে, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শ্বেতা পুন্দিরের স্ন্যাপচ্যাট লেন্স ব্যবহার করে তৈরি ছবিকে ‘লাভ জিহাদ’ এবং সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে, একটি ভুয়ো দাবির সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে।
Sources
Shweta Pundir Facebook Post, August 1, 2025
Shweta Pundir Facebook Post, August 2, 2025
Shweta Pundir Facebook Post, August 4, 2025
Snapchat Lens ‘mmmooort9’
Phonetic Conversation with Shweta Pundir
Tanujit Das
November 21, 2025
Tanujit Das
November 9, 2025
Tanujit Das
November 7, 2025