Newchecker.in is an independent fact-checking initiative of NC Media Networks Pvt. Ltd. We welcome our readers to send us claims to fact check. If you believe a story or statement deserves a fact check, or an error has been made with a published fact check
Contact Us: checkthis@newschecker.in
Fact Check
সম্প্রতি ফেসবুকে কিছু পোস্ট আমাদের সামনে এসেছে যেখানে দাবি করা হয়েছে – ইসলাম প্রধান দেশ ইন্দোনেশিয়ার টাকায় গণেশের মূর্তির ছবি রয়েছে। সেখানে ৮৫% মুসলিম থাকা সত্ত্বেও তাদের টাকায় হিন্দু দেবতা গণেশের ছবি রয়েছে। আর অন্য দিকে ভারতের হিন্দুদের সংখ্যা বেশি হয়েও বিজেপি সরকার এখনো পর্যন্ত ভারতীয় রুপিতে কোনো দেবদেবীর ছবি ব্যবহার করার অনুমতি দেয়নি। এই দাবির সাথে ইন্দোনেশিয়ার ২০,০০০টাকার একটি ছবিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে নোটের মধ্যে ছাপা রয়েছে গণেশের ছবি।
হিন্দু অধ্যুষিত হয়েও ভারতীয় টাকায় কেন হিন্দু দেবদেবীদের মূর্তি থাকবে না এই বিতর্ক তৈরী হয়েছে দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি ভিডিওর পর থেকে। ২৬শে অক্টোবর একটি সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে কেজরিওয়াল বলেন ভারতে এখন ভয়ঙ্কর আর্থিক সমস্যা রয়েছে। আমরা আমাদের জীবনে সমস্ত বাধা, বিঘ্ন দূর করার জন্য যেমন বিঘ্নহর্তা গণেশের পুজো করি এবং ধন-সম্পত্তির লাভের জন্য শ্রী লক্ষ্মী দেবীর আরাধনা করি তেমনি যদি ভারতের নতুন টাকায় লক্ষ্মী-গণেশের ছবি ছাপা হয় তাহলে হয়তো এই আর্থিক সমস্যার কিছুটা সুরাহা হবে।
তিনি আরো বলেন তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করবেন, পুরোনো নোট বাতিল না করে প্রতি মাসে মাসে যে টাকা ছাপা হয় তাতে যেন লক্ষ্মী-গণেশের ছবি থাকে। এই ভিডিওটির ৪ মিনিট ৪২ সেকেন্ডে কেজরিওয়ালকে বলতে শোনা যাচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার কথা। ওনার মতে ৮৫% মুসলিম থাকলেও ইন্দোনেশিয়ার টাকায় এখনো দেখা মেলে হিন্দু দেবতা গণেশের।
ওনার এই টুইটের পর আরো অনেকেই এই বিষয় নিয়ে টুইট করেছে।
ইসলাম প্রধান দেশ ইন্দোনেশিয়ার টাকায় গণেশের মূর্তির ছবি রয়েছে এই দাবিতে ইন্দোনেশিয়ার রুপিয়া ২০,০০০টাকায় গণেশ মূর্তি ছাপা যে ছবিটি ছড়িয়েছে তা বর্তমানে আর চালু নেই।
ভাইরাল এই দাবিটিকে অনুসন্ধান করার সময় আমরা সোজাসুজি Bank Indonesiaর ওয়েবসাইটে যাই। এখানে আমরা ২০১৮ সালের একটি বিজ্ঞপ্তি পাই যেখানে বলা হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার মুদ্রা ১০,০০০, ২০,০০০, ৫০,০০০ ও একলক্ষ টাকার নোট ২০০৮ সালের সরকারি নির্দেশ অনুসারে বন্ধ করার নোটিশ জারি হয়েছিল। এখানে জানতে পারি ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল পুরোনো নোট পাল্টে ফেলার।
এখানে আমরা ভাইরাল কুড়ি হাজার টাকার নোটের ছবি পাই। এই নোটটি চালু হয়েছিল ১৯৯৮ সালে এবং দশ বছর চলার পর তা বদলের নির্দেশ আসে। ইন্দোনেশিয়ার ১০,০০০ ও ২০,০০০ হাজার টাকার নোট চালু হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। দশ হাজারের নোটে জাতীয় বীর তিযুৎ নায়েক দিয়েনের ছবি ছিল এবং কুড়ি হাজারের নোটে হাদজার্ দয়ান্তরের ছবি ছিল। এই টাকায় গণেশের মূর্তিও ছাপা ছিল। কিন্তু এটি ২০১৮ সালের পর আর বৈধ লেনদেনের জন্য কার্যকরী নেই।
ইন্দোনেশিয়া ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইটেই আমরা নতুন টাকার ছবি পাই। এখানে এক হাজার থেকে একলক্ষ টাকার নতুন টাকার ও কয়েনের ছবি রয়েছে। ২০০৫ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রতিটি টাকার ছবি আমরা এখানে পাই। কিন্তু কোথাও গণেশ ছাপা টাকার ছবি নেই। এখানে আমরা দেখি ২০১১, ২০১৬ ও ২০২২ সালে ২০,০০০রুপিয়া কেমন ছিল তা দেওয়া হয়েছে।
যেমন ২০১১ সালে ২০,০০০এর নোটে ওটো ইস্কান্দার দি নাটার ছবি ছিল। ১৮৯৭ সালে জন্ম হয় ওটোর যিনি এক ১৯২১-১৯২৪ সাল পর্যন্ত বাংদুং এর ডেপুটি চেয়ারপারসন ছিলেন। ১৯৪৫ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনি যোগদান করেছিলেন। নোটটির পেছনের দিকে চা বাগানের ছবি রয়েছে।
২০১৬ সালের কুড়ি হাজারের নোটেও ওটো ইস্কান্দার দি নাটার ছবি রয়েছে এবং নোটের পেছনের দিকে রয়েছে কালো অর্কিড ফুল, গোং নৃত্য শিল্পদের ছবি।
নতুন ২০২২ সালের চালু হওয়া ২০,০০০এর নোটে ডঃ জি.এস.এস.জে রাতুলঙ্গীর ছবি রয়েছে সামনের দিকে এবং পেছনের দিকে দেরায়ান দ্বীপ ও অর্কিড ফুলের ছবি রয়েছে। ডঃ রাতুলঙ্গীও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বে যোগদান করেছিলেন। পেশায় সাংবাদিক হলেও তিনি পরবর্তী কালে রাজনীতিতে যোগদান করেছিলেন এবং ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়াসির প্রথম গভর্নর ছিলেন।
আমাদের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে ইসলাম প্রধান দেশ ইন্দোনেশিয়ার টাকায় গণেশের মূর্তির ছবি এখন আর নেই। ইন্দোনেশিয়ার ২০,০০০ রুপির যে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে সেটি ২০১৮ সালের পর থেকে আর ব্যবহৃত হয় না।
Our Sources
সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান checkthis@newschecker.in অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে। এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us -র মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন ও ফর্ম ভরতে পারেন।
Tanujit Das
March 22, 2025
Tanujit Das
February 1, 2025
Tanujit Das
January 30, 2025