Authors
‘হিজাব বনাম গেরুয়া-শাল’ প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে কর্ণাটক পরিণত হয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে। গত মাসে, হিজাব পরার জন্য কিছু মুসলিম ছাত্রীকে উদুপি জেলার একটি সরকারি কলেজে প্রবেশে বাঁধা দেওয়া হয়েছিল। এর পরেই এই অঞ্চলের আরও কয়েকটি কলেজে একই রকম ঘটানা ঘটে। যার পর একদল ছাত্র হিজাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে, গেরুয়া শাল পরে ক্লাসে উপস্থিত হয়েছিল।
অল্প সময়ের মধ্যে, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং হিংসাত্মক রূপ ধারণ করে, যার ফলে ফেব্রুয়ারি ৯, ১০ এবং ১১ তারিখ সমস্ত উচ্চ বিদ্যালয় এবং কলেজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোমাই। এই ঘটনার আবহে, একটি ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াতে, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে শিবমোগায় একটি সরকারি কলেজে গেরুয়া পতাকা দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছে ভারতের জাতীয় পতাকা।
কংগ্রেস নেতা ডি কে শিবকুমারও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মধ্যে ছিলেন যারা ভিডিওটি শেয়ার করেছেন।
ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করেছেন বেশ কয়েকজন ফেসবুক ব্যবহারকারীও।
নিউজচেকারের হোয়াট্সঅ্যাপ (9999499044) নম্বরে যোগাযোগ করে, একই দাবির সত্যতা যাচাইয়ের অনুরোধ করা হয়।
কি নিয়ে প্রতিবাদ?
গত সপ্তাহে উদুপি জেলার কুন্দাপুরের ভান্ডারকার্স কলেজে হিজাব পরা কয়েকজন ছাত্রীকে প্রবেশে বাঁধা দেওয়া হয়েছিল। এমন পদক্ষেপের কারণ হিসেবে ইউনিফর্ম ড্রেস কোডের বিষয়ে সরকারের আদেশ এবং কলেজের ড্রেসকোড নির্দেশিকা বিষয়ে উল্লেখ করে কলেজটির অধ্যক্ষ জানান, ছাত্রীরা এই পদক্ষেপ অস্বীকার করে, এবং হিজাব পরে কলেজের বাইরে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে থাকে। অন্যদিকে হিজাবের বিরুদ্ধে ‘বিক্ষোভ’ করতে একদল হিন্দু ছাত্র গেরুয়া শাল পরে ক্লাসে আসে। এছাড়াও কুন্দাপুরের অন্য দুটি বেসরকারি কলেজ — ভান্ডারকার্স আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স কলেজ এবং ডক্টর বিবি হেগডে ফার্স্ট গ্রেড কলেজ — হিজাব পরা ছাত্রীদের কলেজে প্রবেশে বাঁধা দেয়।
এক মাস ধরে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে ‘হিজাব বনাম গেরুয়া শাল’ প্রতিবাদ । বেশ কয়েকটি শহরে হিংস্র হয়ে ওঠে এই আন্দোলন এবং মঙ্গলবার বানহাট্টিতে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। শিবমোগা সরকারি ফার্স্ট গ্রেড কলেজে, জাফরান শাল পরা একদল ছাত্র “জয় শ্রী রাম” স্লোগান দেয় এবং তাদের মধ্যে একজন পতাকাদন্ডের উপরে উঠে গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করে।
ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যে, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোমাই ফেব্রুয়ারি ৯, ১০, ও ১১ তারিখ সমস্ত উচ্চ বিদ্যালয় এবং কলেজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে, শ্রেণীকক্ষে হিজাব নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে মুসলিম শিক্ষার্থীদের একটি আবেদন কর্ণাটক হাইকোর্টে বিচারাধীন।
Fact Check/ Verification
শিবমোগা কলেজে জাতীয় পতাকাটি সত্যিই একটি গেরুয়া পতাকা দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে কিনা তা যাচাই করার জন্য, নিউজচেকার শিবমোগা সরকারি ফার্স্ট গ্রেড কলেজের অধ্যক্ষ ধনঞ্জয়া বিআরের- এর সাথে যোগাযোগ করে, অধ্যক্ষ দাবিটি খারিজ করেন। তিনি বলেন যে ছাত্রটি যখনগেরুয়া পতাকা উত্তোলন করেছিল তখন পতাকাদন্ডটি খালি ছিল। অধ্যক্ষ্য আরও বলেন, “কলেজ শুধুমাত্র প্রজাতন্ত্র দিবস এবং স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে।”
কলেজটির অধ্যক্ষ নিউজচেকারের সাথে ক্যাম্পাসের একটি ছবিও শেয়ার করেছেন যেখানে পতাকাদন্ডটি খালি দেখা যায়, যা প্রমাণ করে ছাত্রটি পতাকা উত্তোলনের সময় পতাকাদন্ডটিতে জাতীয় পতাকা ছিল না।
আমরা শিবমোগা এসপি বিএম লক্ষ্মী প্রসাদের সাথেও যোগাযোগ করেছি, যিনি দাবিটি খারিজ করেছেন। এসপি নিউজচেকারকে বলেন, “না এটা সত্য না। পতাকাদন্ডটিতে কোনো পতাকা ছিল না। তারা একটি গেরুয়া পতাকা বেঁধেছিল এবং পরে এটি সরিয়ে ফেলা হয়।”
এএনআইও এসপিকে উল্লেখ করে বলে, “একটি প্রতিবেদন ছিল যে জাতীয় পতাকা নামানো হয়েছিল এবং তার জায়গায় একটি গেরুয়া পতাকা লাগানো হয়েছিল কিন্তু দন্ডটিতে কোনও জাতীয় পতাকা ছিল না। দন্ডটির উপরে শুধুমাত্র একটি গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল এবং পরে ছাত্ররা নিজেরাই তা সরিয়ে ফেলেছিল।”
আমরা সাংবাদিক ইমরান খানের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা একটি ভিডিও দেখেছি, যেখানে এসপি প্রসাদকে জাতীয় পতাকা নামানোর বিষয়টি অস্বীকার করতে শোনা যায়।
নিউজচেকার Google মানচিত্রের সাহায্যে শিবমোগা সরকারি ফার্স্ট গ্রেড কলেজের ছবি ও ভিডিও পর্যবেক্ষণ করেছে, এবং বেশিরভাগ ছবিতে পতাকাদন্ডটি খালি দেখা যায়।
Conclusion
জাতীয় পতাকা নামিয়ে তার পরিবর্তে শিবমোগা সরকারি ফার্স্ট গ্রেড কলেজে পতাকার খুঁটিতে গেরুয়া পতাকা লাগানো হয়েছে বলে দাবিটি বিভ্রান্তিকর। ছাত্রটির পতাকা উত্তোলনের সময় পতাকাদন্ডটি খালি ছিল।
Result: Misleading Content
Our Sources
Dhananjaya BR, Principal, Government First Grade College in Shivamogga
BM Laxmi Prasad, Shivamogga SP
किसी संदिग्ध ख़बर की पड़ताल, संशोधन या अन्य सुझावों के लिए हमें WhatsApp करें: 9999499044 या ई-मेल करें: checkthis@newschecker.in