Authors
With a penchant for reading, writing and asking questions, Paromita joined the fight to combat and spread awareness about fake news. Fact-checking is about research and asking questions, and that is what she loves to do.
ফেসবুকে কিছু রাজনৈতিক গ্রুপে রেলের খাবারের দাম নিয়ে একটি পোস্ট ছড়িয়েছে যেখানে দাবি করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার স্থাপিত হওয়ার পর থেকে দূরপাল্লার ট্রেনের খাবারের দাম প্রায় নাকি দ্বিগুন করা হয়েছে।
ভাইরাল পোস্ট অনুসারে দূরপাল্লা এক্সপ্রেস ট্রেন যেমন রাজধানী, দুরন্ত, শতাব্দীর ফার্স্ট এসিতে এক কাপ চায়ের দাম যা আগে ছিল ১৫টাকা তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫টাকা, প্রাতঃরাশের নতুন দাম ১৪০, দুপুর ও রাতের খাবারের দাম রাখা হয়েছে ২৪৫ যা আগে ছিল ১৪৫। এই ভাবেই দ্বিতীয়, তৃতীয় এসি কোচে এবং অন্যান্য এক্সপ্রেস ও মেল ট্রেনে নতুন খাবারের কি দাম হয়েছে তা দেওয়া চার্ট করে দেওয়া হয়েছে।
Fact-check / Verification
দূরপাল্লা ট্রেনে খাবারের মান ও দাম নিয়ে যাত্রীরা অভিযোগ জানিয়েছে এই ধরণের অনেক খবরের সম্মুখীন হয়েছি আমরা। ট্রেন দেরি না করার পরের অত্যন্ত খারাপ মানের খাদ্য সরবরাহ করার হয়েছে বলেও রাজধানীর মতো এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদের করা অভিযোগের খবর সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছিলো। বর্তমানে দাবি করা হচ্ছে রাজধানী, শতাব্দী, দুরন্তর মতো গতিসম্পন্ন ট্রেন ও অন্যান্য এক্সপ্রেস, মেল রেলের খাবারের দাম দ্বিগুন করা হয়েছে মোদী সরকার কেন্দ্রে আসার পর থেকে। কিন্তু এই দাবিটি কতটা সত্যি? UPA বা কংগ্রেসের সময় কালে খাবারের দাম কত ছিল জানার জন্য আমরা অনুসন্ধান শুরু করি।
কেন্দ্রে মোদী সরকার স্থাপিত হওয়ার পর থেকে রেলের খাবারের দাম দ্বিগুন করা হয়েছে এই দাবিটি পুরোপুরি সত্যি নয়,
২০১৪ সালে কংগ্রেস সরকারকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়ে কেন্দ্রে সরকার স্থাপন করে বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন নরেন্দ্র মোদী। দাবি মতে প্রধানমন্ত্রী মোদী আসার পর থেকে নাকি রেলের খাবারের দাম দ্বিগুন করা হয়েছে। ২০১৪ সালের আগে দূরপাল্লা ট্রেনের খাবারের দাম কত ছিল, সেই দাম পরিবর্তিত হয়ে নতুন কি দাম ছিল জানার জন্য সঠিক তথ্যের অনুসন্ধানে লেগে পড়ি।
কীওয়ার্ড দিয়ে খোঁজার পর আমার ২০১২ সালের ভারতীয় রেল মন্ত্রকের একটি নোটিশ পাই যেখানে বলা হয়েছে ২০০৩ সালে রেল কমিটি ও অর্থমন্ত্রকের সিদ্ধান্তের রেলের খাবারে যে দেন ছিল তা পরিবর্তিত হয়েছিল ২০১২ সালে অর্থাৎ যখন কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার ছিল। উক্ত নোটিশে দূরপাল্লা ট্রেনের যাত্রীদের পরিবেশিত খাবারের বর্ধিত মূল্যের উল্লেখ রয়েছে।
২০১২ সালের নতুন দাম
চা -৫/-
টি ব্যাগ সমেত চা ও কফি – ৭/-
গরম ফ্লাস্কে চা- ১০/-
গরম ফ্লাস্কে কফি- ১৫/-
ট্রেনের পরিবেশিত সিল করা জলের ১ লিটারের বোতল – ১৫/-
নিরামিষ প্রাতঃরাশ – ২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩০/- হয়েছিল
আমিষ প্রাতঃরাশ – ৩০টাকার জায়গায় ৩৫/- টাকা করা হয়েছিল
নিরামিষ খাবার- ৫০ টাকা
আমিষ খাবার – ৫০ থেকে বেড়ে ৫৫টাকা হয়েছিল
অর্থাৎ ২০১২ সালে রেলের খাবারের দাম ২-৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছিলো।
এর পরের বছর অর্থাৎ ২০১৩ সালের রাজধানী, দুরন্ত ও শতাব্দীতেও খাবারের নতুন দাম ধার্য হয়। প্রথম শ্রেণীর এসি কোচে দাম আগের মতোই থাকলেও দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চেয়ারকারে যাত্রা করা যাত্রীদের খাবারের জন্য প্রায় ৮৮ থেকে ১২৫ টাকা খরচ করতে হবে বলে জানতে পারি News18 এর ২০১৩ সালের প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে।
আবার জানা যাক বিজেপি সরকারের স্থাপিত হওয়ার পর রেলের খাবারের দামের কোনো হেরফের হয়েছিল কিনা। রেল মন্ত্রকের ২০১৭ সালের একটি টুইট পাই যেখানে ট্রেনের খাবারের দাম নিয়ে যাত্রীদের ক্রমাগত অভিযোগের পর সঠিক দামের একটি চার্ট দেওয়া হয়েছিল। আমরা দেখে ২০১১ সালে রেলের খাবারের দাম ও ২০১৭ সালের খাবারের দাম এক ছিল। অর্থাৎ ২০১৪তে মোদী সরকার আসার পর এক্সপ্রেস ও মেল ট্রেনের খাবারের দাম আগের মতোই ছিল।
অন্যদিকে ২০১৭ সালে GST চালু হওয়ার পর থেকে রাজধানী, দুরন্ত ও শতাব্দীতেও পরিবেশিত খাবারের দামের পার্থক্য লক্ষ করা গিয়েছিলো। যদিও এর আগে রেল মন্ত্রক থেকে খাবার ছাড়াও টিকিট পাওয়া যাওয়ার মতো পন্থা চালু করেছিল। ২০১৮ সালে GST সমেত খাবারের দাম কি ছিল দেখে নেওয়া যাক-
ফার্স্ট এসি ও এক্সিকিউটিভ চেয়ারকারে চা- ১৫/-
সকালের খাবার -৯০/-
দুপুর ও রাতের খাবার – ১৪০ টাকা
সন্ধে বেলার চা- ৪৫ ও ৭০ টাকা
এসি দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চেয়ারকারে চা- ১০/-
প্রাতঃরাশ – ৭০/-
দুপুর ও রাতের খাবার – ১২০ টাকা
সন্ধ্যাবেলার চা- ৪৫ টাকা
ফেসবুকে রেলের খাবারের দাম উল্লেখ করে যে মূল্যগুলো দেওয়া হয়েছে তা কোন সালের এবং কবে থেকে লাগু হয়েছে জানার চেষ্টা করি। Financial Express এর ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসের দূরপাল্লা ট্রেনের IRCTC নতুন খাবারের কত ধার্য করেছে তা সেখানে উল্লেখ করা আছে। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে এই পরিবর্তিত দামটি আনার ৩-৪ মাস পর তা প্রযোজ্য হবে বলে জানতে পারি। রিপোর্টে উল্লেখিত নতুন দাম
ফার্স্ট এসি ও এক্সিকিউটিভ চেয়ারকারে চা- ৩৫/-
সকালের খাবার -১৪০/-
দুপুর ও রাতের খাবার – ২৪৫ টাকা
সন্ধে বেলার চা- ১৪০ টাকা
এসি দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চেয়ারকারে চা- ২০/-
প্রাতঃরাশ – ১০৫/-
দুপুর ও রাতের খাবার – ১৮৫ টাকা
সন্ধ্যাবেলার চা- ৯০ টাকা
দুরন্ত স্লিপারে চা- ১৫/-
সকালের খাবার -৬৫/-
দুপুর ও রাতের খাবার – ১২০ টাকা
বিকেলের চা- ৫০ টাকা
এছাড়া অন্যান্য মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনে IRCTC অনুসারে
নিরামিষ প্রাতঃরাশ – ৪০/-
আমিষ প্রাতঃরাশ – ৫০/-
নিরামিষ খাবার- ৮০/- এর সাথে
ডিমের তরকারি সহযোগে খাবার ৯০/-
মুরগির মাংস সমেত খাবার -১৩০ টাকা করেছে IRCTC
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে ফেসবুকে ভাইরাল দাবি কেন্দ্রে মোদীর সরকার আসার পর থেকে রেলের খাবারের দাম দ্বিগুন হয়েছে এই দাবিটি অর্ধ-সত্যি। ২০০৩ সালের পর ২০১২ সালে খাবারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল যখন কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার ছিল। ২০১৪ সালে সরকারের পরিবর্তন ঘটলেও ২০১৭ সাল পর্যন্ত একই ছিল খাবারের দাম।
Conclusion
কেন্দ্রে মোদী সরকার আসার পর থেকে রেলের খাবারের দাম দ্বিগুন করা হয়েছে এই ধরণের একটি পোস্ট ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। আমাদের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে এই দাবিটি অর্ধেক সত্যি। ২০১২ সালে এক্সপ্রেস, মেল ট্রেন ও ২০১৩ সালে রাজধানী, দুরন্ত, ও শতাব্দীর খাবারের দাম পরিবর্তন করা হয়েছিল এবং ২০১৭ সালে এক্সপ্রেস ও মেল ট্রেনের খাবারের দাম এক থাকলেও রাজধানী, দুরন্ততে কিছু তা পরিবর্তন হয়। সর্বশেষ দাম পরিবর্তিত হয়েছে ২০১৯ সালের যা এখনো পর্যন্ত কার্যকরী হয়নি বলে জানা গেছে।
Result- Partially true
Our sources
Ministry of Railways official tweet- https://indianrailways.gov.in/railwayboard/uploads/directorate/traffic_comm/Comm-Cir2K12/CC-78.PDF https://twitter.com/RailMinIndia/status/844051869303558144
Financial Express- https://www.financialexpress.com/infrastructure/railways/irctc-food-on-trains-now-costlier-prices-on-rajdhani-shatabdi-duronto-full-rate-list/1765771/
সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান checkthis@newschecker.in অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে। এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us -র মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন ও ফর্ম ভরতে পারেন।
Authors
With a penchant for reading, writing and asking questions, Paromita joined the fight to combat and spread awareness about fake news. Fact-checking is about research and asking questions, and that is what she loves to do.