Authors
With a penchant for reading, writing and asking questions, Paromita joined the fight to combat and spread awareness about fake news. Fact-checking is about research and asking questions, and that is what she loves to do.
দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে, আর এই আবহে ফেসবুকে ভাইরাল দাবি শ্রীলঙ্কার তাদের জিডিপির ৯৫% ঋণ নিয়েছে এবং আমাদের দেশের জিডিপির ৮৩% শতাংশ ঋণ নিয়েছে মোদি সরকার। ফেসবুকে মমতা ব্যানার্জী সাপোর্টার্স ও অভিষেক ব্যানার্জী সাপোর্টার্স নামের পেজ থেকে এই দাবি করা হয়েছে।
সাগর দ্বারা বেষ্টিত শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপক্ষ সম্প্রতি দেশকে দেউলিয়া (Sri Lanka Bankrupt) বলে ঘোষণা করেছেন। মূলত জন মোহিনী প্রকল্পের বার বাড়ন্ত এবং সেই কারণে বিশ্বব্যাঙ্ক থ্যেকে ঋণের পর ঋণ নেওয়ার কারণকে শ্রীলঙ্কার আর্থিক অবনতির (Sri Lanka economic crisis) কারণ রূপে দায়ী করা হয়েছে। দুধ, পাউরুটি, সব্জি, ফল প্রায় আকাশ ছোয়া দামে বিক্রি হতে শুরু করেছে। বিদ্যুতের জ্বালানির খরচ বাঁচানোর জন্য দিনের প্রায় বেশির ভাগ সময়েই বন্ধ থাকছে বিদ্যুৎ পরিষেবাও। জল, ইন্টারনেটের পরিষেবাও তথৈব চ। খাবার, জলের অভাবে রাস্তায় নেমে পড়েছে সাধারণ মানুষ। জায়গায় জায়গায় সরকারি সম্পত্তিতে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) এর তথ্য অনুযায়ী শ্রীলঙ্কাকে এই বছরের মার্চ মাসের শুরুতে IMF সাবধান বাণী শুনিয়েছিল। যে ঋণ নেওয়া হয়েছে তা আদায়ের জন্য শুল্কের কর বৃদ্ধি ও অন্যান্য খাতে খরচের মাত্রা কমানোর উপদেশ দিয়েছিলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। কিন্তু সেই কথা গ্রাহ্য করার বদলে শ্রীলঙ্কাবাসীর সামনে রাজাপক্ষের সরকার জনদরদী সরকার রূপে প্রমাণিত হওয়ার জন্য দেদার প্রকল্পের সূচনা করেছিল যার অর্থ এসেছিল চীন, জাপান ও IMF থেকে। এবার সেই অর্থ মেটাতে গিয়ে কার্যত দেউলিয়া হয়ে পড়েছে মহিন্দা রাজাপক্ষ। বর্তমানে সমস্ত বৈদেশিক ঋণ চোকাতে দেশ একেবারেই ব্যর্থ তা ঘোষণা করেছে রাজাপক্ষের সরকার।
Fact check / Verification
শ্রীলঙ্কার আর্থিক অবনতির আবহে ফেসবুকে ভাইরাল দেশের জিডিপির ৮৩% শতাংশ ঋণ নিয়েছে মোদি সরকার এই দাবিটির সত্যতা যাচাই করা শুরু করি। গুগলে ‘sri lanka’s current debt to gdp ratio’ লিখে খোঁজার পর Statista নামের একটিও ওয়েবসাইটের তথ্য পাই যেখানে শ্রীলঙ্কার ২০১৬-২০২৬ সালের জিডিপি কি ছিল ও কি হতে পারে তার হদিশ দিয়েছে।
এছাড়াও আমরা IMF এর ওয়েবসাইট থেকে জানতে পারি ভারত ও শ্রীলঙ্কার GDP (Gross domestic product) এর উপর কত শতাংশ ঋণ নিয়েছে।
এই IMF এর ওয়েবসাইট থেকেই জানতে পারি ২০২১ সালে ভারতের GDPর উপর ৯০.৬০১% ঋণ ছিল এবং শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে এই পরিমাণটি ছিল ১০৯.২৫০% . বর্তমানে ভারতের ৮৮.৮০৩% ও শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে ১১১.৪১২% হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই তথ্য থেকেই জানতে পারি ভারতের মোট ঋণ জিডিপির একটি বড় অংশের সমান অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার সমগ্র GDP র থেকেই বেশি রয়েছে এই দেশের ঋণের পরিমান। ভারতের উপর আসলে কত পরিমান ঋণের বোঝা রয়েছে জানার জন্য আমরা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ওয়েবসাইটে যাই। RBI এর তথ্য বলছে ২০২১-২০২২ সালের অর্থ বর্ষে ভারতের ঋণের পরিমান জিডিপির ৭৩.৯৫% , যার মধ্যে বৈদেশিক ঋণের পরিমান ২.৬২% .বাকি ৭১.৩৩% দেশীয় ঋণ রূপে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬.৬৩% ভারতের রাজ্যের সরকারের ঋণের পরিমান ও ৪৮.২৪% কেন্দ্র সরকারের উপর রয়েছে।
শ্রীলঙ্কা ও ভারতের ঋণের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
সোশ্যাল মিডিয়াতে শ্রীলঙ্কার দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার আবহে ভারতের ঋণ নিয়ে দাবি করা হয়েছে দেশের জিডিপির ৮৩% শতাংশ ঋণ নিয়েছে মোদি সরকার যা আমাদের অনুসন্ধানের দ্বারা প্রাপ্ত তথ্যে মিথ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এবার জানা যাক ভেতর ও শ্রীলঙ্কার ঋণের মধ্যে কি পার্থক্য আছে। মূলত দেখতে হবে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণের পরিমান কত শতাংশ, এই ঋণ পরিশোধের সময় শ্রীলংকার মুদ্রার বিশ্ব বাজারে দাম কত, ঋণের মেয়াদ কত ও এটি শোধ করার জন্য কত সময় চাওয়া হয়েছে। মূলত অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা শ্রীলঙ্কার সরকারের লাগাম ছাড়া জনমোহিনী প্রকল্পই আজ এই আর্থিক দুরাবস্থাকে ডেকে এনেছে বলে দাবি করেছেন।
Conclusion
আমাদের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে শ্রীলঙ্কার আর্থিক দিক থেকে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার আবহে ভারতকে নিয়ে ফেসবুকে দাবি করা হয়েছে
দেশের জিডিপির ৮৩% শতাংশ ঋণ নিয়েছে মোদি সরকার, এই দাবিটি মিথ্যে।
Result: Misleading/Partly False
সন্দেহজনক কোনো খবর ও তথ্য সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে অথবা সত্যতা জানতে আমাদের লিখে পাঠান checkthis@newschecker.in অথবা whatsapp করুন- 9999499044 এই নম্বরে। এছাড়াও আমাদের সাথে Contact Us -র মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন ও ফর্ম ভরতে পারেন ।
Authors
With a penchant for reading, writing and asking questions, Paromita joined the fight to combat and spread awareness about fake news. Fact-checking is about research and asking questions, and that is what she loves to do.